নিজস্ব সংবাদদাতা: বিহার ও ঝাড়খন্ড থেকে এই রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুরে পরপর কয়েকটি ডাকাতির করার ছক কষে ঢুকেছিল ১৩ সশস্ত্র ডাকাত। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ জানতে পেরেই খবর দেয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশকে৷ তারপরই নিজেদের নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে অভিযান শুরু হয় রবিবার দুপুর থেকে, ঘাটাল মহকুমার বিশেষ স্থানে। টানা প্রায় ৮ ঘন্টার অভিযানে পুলিশের সাফল্য মেলে। অস্ত্র সহ ১৩ ডাকাতকে গ্রেফতার করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।
পুলিশ তারপরেই পরিকল্পনা জানতে পারে। রবিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই বিষয়েই বিস্তারিত জানালেন পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তিনি বলেন, “কলকাতা পুলিশের STF (special task force) এর পক্ষ থেকে একটি খবর এসেছিল। জানা গিয়েছিল, পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি প্রান্তে অপরাধমূলক কাজকর্ম করার জন্য পরিকল্পনা করছে একটি বড় ডাকাতের দল। সেই দলে ১০ থেকে ১২ জন রয়েছে। এই খবর পাওয়ার পরে আমরা অভিযান শুরু করি। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এর কাছে আরো তথ্য নিয়ে আমরা আমাদের লোকাল সোর্স ও নেটওয়ার্ক সক্রিয় করি”।
রবিবার দুপুর বারোটা থেকে অভিযান শুরু হয়। অপারেশন সফল হয়। ১৩ জনকে গ্রেপ্তার হয়। যারা বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছে। এই ধৃত ১৩ জনের মধ্যে ৬ জনই বিহারের জামুই ও ঝাড়খণ্ডের দেওঘর থেকে এসেছে বলে জানা যাচ্ছে। অস্ত্র বাইরে থেকে এনে তারা জেলাতে একটি বড়ো রাসায়নিক সারের গুদামে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল রবিবার রাতেই। তাদের কাছে তিনটে বন্দুক পাওয়া গেছে। যেটাকে ওয়ান শাটার আর্মস বলা হয়। দশটা কার্তুজ পাওয়া গেছে, বলেই এদিন জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, "পরবর্তীতে এই দুষ্কৃতিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে গড়বেতা, দাসপুর, মেছোগ্রাম রুটে একটি লরিকে চিহ্নিত করেছিল। সেটাকে তারা হাইজ্যাক করবে বলে পরিকল্পনা করেছিল। সঙ্গে টাকা পয়সা বা অন্যান্য জিনিসও ছিনতাই করবে। এটা করতে গিয়ে কারো প্রাণহানি হলেও সেখানে তারা পিছপা হবে না। এমন পরিকল্পনাও ছিল ঘাটাল সীমান্ত এলাকাতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কও টার্গেট করেছিল তারা। আমরা তাদের কাছ থেকে যে মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছি, সেই ফোনেতে ওই ব্যাঙ্কটির ছবি পাওয়া গেছে। ব্যাঙ্কের যাবতীয় তথ্য ওই মোবাইলের মধ্যে পাওয়া গেছে। প্রায় আট ঘন্টা ধরে এই অভিযান চালাতে হয়েছে। এই অভিযানে ঘাটাল থানা এবং চন্দ্রকোণা থানার অফিসাররা, অ্যাডিশনাল এসপি, এসডিপিও, আমি নিজেও ছিলাম সেখানে। সবাই মিলে এই পুরো টিমকে আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছি”।