নিজস্ব সংবাদদাতা : ভোটের মুখে রামমন্দির-দক্ষিণেশ্বর-তারকেশ্বর তরজা! ভোট এলে রামের কথা মনে পড়ে! একটি কাট আউট শেয়ার করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, যেখানে লাইনটির বক্তা হিসেবে নাম লেখা রয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সঙ্গে এও লেখা রয়েছে, ''আমরাও অনেক করেছি.. দক্ষিণেশ্বর-তারকেশ্বর।''
ভোটের মুখে ধর্মের রাজনীতির জারি! মুখ্যমন্ত্রীর কোট তুলে ধরে পাল্টা দিলেন শুভেন্দু। সারাদিন সেভাবে ট্যুইটারে অ্যাক্টিভ না থাকলেও বুধবার বিকেলে করলেন এক লম্বা চওড়া পোস্ট।
শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেন, ''কোন ব্যক্তি যখন নিজেকেই সবচেয়ে উচ্চস্থানে বসিয়ে দেন, তখন ধর্ম অধর্মের জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
হিন্দুধর্মের পীঠস্থান নিয়ে এমন বিভ্রান্তিকর ও সর্বৈব মিথ্যা বচন কেউ উচ্চারিত করতে পারে তা সত্যিই অকল্পনীয়।''
তৃণমূল কর্মীদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা রানীর মতো। সর্বসত্য। কটাক্ষ করে সত্যিটা তুলে ধরেন বিরোধী দলনেতা। দক্ষিণেশ্বর ও তারকেশ্বর প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দেন শাসক দলকে। ট্যুইট বার্তায় লেখেন, ''১৬৮ বছর আগে, ১৮৫৫ সালের মে মাসের ৩১ তারিখ দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন লোকমাতা রানী রাসমণি দেবী। রানী রাসমণি দেবী, অন্নপূর্ণা পুজোর জন্য কাশীযাত্রার আয়োজন করছিলেন, এমন সময় জনশ্রুতি অনুসারে, রওনা হওয়ার আগের রাতে উনি মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। মা ওনাকে বলেন, কাশী যাওয়ার প্রয়োজন নেই, গঙ্গাতীরেই একটি সুন্দর মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করতে। এই স্বপ্নাদেশের পর, রানী রাসমণি দেবী গঙ্গাতীরে জমি ক্রয় করেন এবং মন্দির নির্মাণ শুরু করেন।
এই মন্দিরের ইতিহাসের সঙ্গে সাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, মা সারদা দেবী এবং বিশ্ব বরেণ্য সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছেন।'' পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, ''তারকেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন এক অবাঙালি। পরম শিবভক্ত শ্রী বিষ্ণুদাস উত্তরপ্রদেশ থেকে হুগলিতে এসে বসবাস শুরু করেন।
তারকেশ্বরের শিবলিঙ্গ কেউ স্থাপন করেননি, তাই তারকেশ্বরের শিবলিঙ্গকে বলা হয় 'স্বয়ম্ভূ লিঙ্গ'।
বিষ্ণুদাসের ভাই জঙ্গলে একটি কালো পাথর দেখতে পান। গরুরা প্রতিদিন এসে ওই খণ্ডের উপর দুধ দান করে যায় ৷ সেকথা উনি বিষ্ণুদাসকে জানান। পরে বিষ্ণুদাস স্বপ্নাদেশে ওই পাথরটিকে শিবজ্ঞানে পুজো করার নির্দেশ পান, তাই এর পরে ছোট একটি মন্দির গড়ে পাথরটিকে পুজো করতে শুরু করেন তিনি। তৈরি হয় মন্দির। মহাদেবের তারকেশ্বর রূপের নামে নামকরণ হয় মন্দিরটির। বহুবার পুনর্নির্মাণ হয়েছে এই মন্দিরের। ১৭২৯ সালে মল্লরাজারা মন্দিরটির সংস্কার করেন। বর্তমানে যে মন্দিরটি দেখা যায় তা মল্লরাজাদেরই তৈরি। স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে মল্লরাজ ভারামল্ল মন্দির পুনর্নির্মাণ করেন ৷''