হাবিবুর রহমান, ঢাকা: চৈত্রের শেষ দিন আজ শনিবার। একদিন পরেই বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ ১৪৩১। পুরনো দিনের দুঃখ, গ্লানি, হতাশা দূর করে আসবে নতুন ভোর। যে ভোরে উদিত হবে নতুন সূর্য। মুছে যাবে সব জঞ্জাল। নব উদ্যমে সাজবে পৃথিবী। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা।’ বাঙালির কৃষ্টিতে রমনার বটমূলে বর্ষবরণ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা যেন বরাবরই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রাতে আয়োজনের ব্যত্যয় ঘটেনি।
চারুকলা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দিন-রাত এক করে জোরেশোরে চালিয়ে নিচ্ছেন মঙ্গল শোভাযাত্রার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পর্বের কাজ। হাতে মাত্র একদিন সময় থাকায় পুরোদমে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতির কর্মযজ্ঞে বিভোর রয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ বছর অনুষদের ২৫ তম ব্যাচ দায়িত্ব পেয়েছে। বিভিন্ন মোটিভে সজ্জিত থাকছে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা। টেপা পুতুল, হাতি, গন্ধগোকুল, চাকার একটি ডেকোরেটিভ ডিজাইন এবারের শোভাযাত্রায় এই চার স্ট্রাকচার স্থান পেতে যাচ্ছে।পুরো আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত বরাদ্দ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তৈরি সরা, মুখোশ ও পেইটিং বিক্রি করে শোভাযাত্রার খরচ বহন করা হচ্ছে।
এ বছর আনুমানিক ১২ লাখ টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। আগামি রোববার সকাল ৯টায় চারুকলা থেকে বের হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বর্ণিল শোভাযাত্রা। উল্লেখ্য, স্বৈর-সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ঐক্য এবং একই সঙ্গে শান্তির বিজয় ও অপশক্তির অবসান কামনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম আনন্দ শোভাযাত্রার প্রবর্তন হয়। ওই বছরই ঢাকাবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এ শোভাযাত্রা। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এই আনন্দ শোভাযাত্রা বের করার উদ্যোগ প্রতি বছর অব্যাহত রাখেন। ১৯৯৬ সালে থেকে চারুকলার এই আনন্দ শোভাযাত্রা মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে নাম লাভ করে। ২০১৬ সালে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রা জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেসকোর মানবতার অধরা বা অস্পর্শনীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে।