আসি আসি করেও আসছে না বর্ষা! 'বিপর্যয়'- এর জন্যই কি বাংলার এই বিপর্যয়?

বেশ কয়েক বছর ধরেই বর্ষা চলেছে ধীর ছন্দে। তবে এবার একটু অন্য রকম। এবার তার আগমন নিয়ে একেবারেই আঁচ করতে পারছেন না আবহবিদরা নিজেরাও। 'বিপর্যয়'- এর জন্যই কি বাংলার এই অবস্থা?

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
heavy rain.jpg

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ বাদে কাল ১ আষাঢ়। অর্থাৎ ঢুকে যাচ্ছে বর্ষা। বর্ষা মানেই তো খিচুড়ি, ইলিশ, মাটির সোঁদা গন্ধ। কিন্তু বৃষ্টিই যদি তেমন ভাবে না পড়ে তাহলে তো সব মাটি। এখনও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকে পড়ার দিন হল ৮ জুন। বর্ষা বিদায় নেওয়ার দিন ৮ অক্টোবর। কিন্তু আজ জুন মাসের ১৬ তারিখ আর এখনও আকাশের দিকে হাপিত্যেশ করে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। বর্ষা চলেছে বিলম্বিত লয়ে। ভোগান্তি হচ্ছে বাংলার মানুষের। 

আসলে এবার বিষুবরেখা পেরিয়ে মৌসুমি বায়ু আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঢোকার মুখে বড় বিপদের মুখে পড়েছে। উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হওয়া ‘টাইফুন’ মৌসুমি বায়ুকে বিষুবরেখা পেরোতেই দেয়নি। তাই শুরুতেই বাধা পেয়েছে বর্ষা। এই পরিস্থিতির জন্য মূলত এল নিনোকেই দায়ী করছেন আবহবিদেরা। এপ্রিল মাস থেকে বাড়তে শুরু করেছে প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা। তার প্রভাবেই এই উষ্ণতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গোলমাল হচ্ছে। যে সময়ে উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ার কথা, সেখানে তখন বৃষ্টি হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়নি এর ফলে। 

বর্ষা বারবার পথ হারিয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে দেরিতে পৌঁছনোর পরেও আবার বাধা দেখা দিল। আরবসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ নতুন বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। এই মুহূর্তে তা গুজরাত উপকূলে ধ্বংসের বার্তা নিয়ে এসেছে। ‘বিপর্যয়’-এর প্রভাব বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় না পড়লেও তার শক্তি যত বেড়েছে, বঙ্গোপসাগর উপকূলের সব জলীয় বাষ্পকে সে তত টেনে নিয়ে গিয়েছে গুজরাতের দিকে। বর্ষা উত্তরবঙ্গে দেরিতে প্রবেশ করলেও দক্ষিণবঙ্গে কবে পৌঁছতে পারে, তার জন্য আবহবিদেরা ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’-এর দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। কারণ, ওই ঘূর্ণিঝড় স্থলভূমিতে ঢুকে দুর্বল হওয়ার পরে বঙ্গোপসাগরের জলীয় বাষ্প আর পশ্চিম উপকূলের দিকে যাবে না। বরং তখন বঙ্গোপসাগর উপকূলে জোরদার বর্ষণ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে।

জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে ছিল মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের মূল ধারা। অন্য ধারাটি আবার আন্দামানের উপরে ঘোরাফেরা করছিল। তারপরে নির্দিষ্ট দিকে অর্থাৎ বঙ্গোপসাগরের দিকে না গিয়ে চলে যায় দক্ষিণ চিন সাগরের দিকে। ফলে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের গোড়াতেও উত্তরবঙ্গে পাহাড়ের‌ তাপমাত্রা টক্কর দিচ্ছিল রাজস্থানকে। পাহাড়জুড়ে জলকষ্ট দেখা গেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল হয়ে উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢোকার কথা ৫ জুনের মধ্যে। কিন্তু সেখানে খুব দুর্বল মৌসুমি বায়ু পৌঁছল এই সপ্তাহে।