নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে অবশেষে এল খুশির খবর। এগারো দিন পর বুধবার হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে তাঁকে, এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে। ছেড়ে দেওয়ার পরে বাড়িতে চলবে ফিজিওথেরাপি। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ এবং অল্প পরিমাণে তরল ও নরম খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে গান শুনছেন বুদ্ধবাবু।
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে যে বাড়িতেও কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বুদ্ধদেবকে। তাঁর বাড়ি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাইরের কেউ যাতে বাড়িতে না ঢোকেন, সে ব্যাপারে জোর দিতে হবে। অর্থাৎ, নতুন করে যাতে বুদ্ধদেবের শরীরে সংক্রমণ না ছড়ায়, তা বিশেষভাবে সুনিশ্চিত করতে চাইছেন চিকিৎসকেরা। বাড়িতে থাকবেন একজন নার্স। আগামী এক সপ্তাহ বুদ্ধদেবের রাইলস টিউব খোলা হবে না। খাবার তিনি গলাধঃকরণ করতে পারছেন কি না, সেটা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। চলবে ‘সোয়ালো অ্যাসেসমেন্ট’। ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বাড়িতেই করা হবে ‘চেস্ট ফিজিওথেরাপি’ এবং রিহ্যাবিলিটেশন। বাড়িতে রাখা হবে বাইপ্যাপ সাপোর্ট, নেবুলাইজেশন সাপোর্ট। শুধু তাই নয়, আগামী বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বুদ্ধদেবকে তাঁর বাড়িতে দেখভাল করবে হাসপাতালের দেওয়া ‘হোম কেয়ার টিম’। ২৪ ঘণ্টা ধরেই পর্যবেক্ষণে রাখা হবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। গত শনিবার থেকে বুদ্ধদেবের অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার পর থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই দিব্যি সুস্থ রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এতে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হতে পেরেছেন চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার অর্থাৎ আগামীকাল বুদ্ধদেবের রক্ত পরীক্ষা করানো হবে। তাঁকে গান শোনানো হচ্ছে।
অতীতে একাধিকবার অত্যন্ত সংকটজনক পরিস্থিতি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন তিনি। বুদ্ধদেববাবু যখন করোনায় ২০২১ সালে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তখন তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও সংকটজনক হয়ে উঠেছিল। রবিবার তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা যায় যে মাঝে মাঝে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হচ্ছে তাঁকে। তিনি সজ্ঞানে রয়েছেন এবং চিকিৎসকদের দেখে সাড়া অবধি দিচ্ছেন। তিনি এবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মূল উদ্বেগের জায়গা ছিল তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা। সেই মাত্রা ৬৮-তে নেমে যাওয়ার বিষয়টা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঠেকেছিল চিকিৎসকের কাছে। আসলে এই মাত্রা ৯০-র নীচে নামলেই বিপদের আশঙ্কা করা হয়। আর এই অক্সিজেনের স্যাচুরেশন কমে গিয়ে শ্বাসকষ্ট হওয়ার কারণে তাঁকে ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে।