কলকাতার দুর্গা প্রতিমা তৈরির নেপথ্যে কি আছে ?

কলকাতার দুর্গা প্রতিমাশিল্পীরা অনবদ্য।

author-image
Adrita
New Update
Durga

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ কলকাতা তার ঐশ্বর্যময় দুর্গাপূজা উৎসবের জন্য বিখ্যাত। দেবী দুর্গার জটিল মূর্তি দিয়ে শহরটি জীবন্ত হয়ে ওঠে, যা দক্ষ শিল্পীদের দ্বারা তৈরি। এই শিল্পীরা কুমারটুলি, মূর্তি নির্মাণের জন্য পরিচিত একটি ঐতিহাসিক এলাকায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে। এখানে, এই মূর্তি তৈরির প্রক্রিয়া একটি শিল্প এবং একটি ঐতিহ্য উভয়ই।

শিল্পীদের কারুশিল্পঃ কুমারটুলির শিল্পীরা উৎসবের কয়েক মাস আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করেন। তারা গঙ্গা নদীর মাটি ব্যবহার করে মূর্তি তৈরি করেন। এই মাটি মহিমান্বিত মনে করা হয় এবং প্রতিটি সৃষ্টিতে একটি অনন্য স্পর্শ যোগ করে। শিল্পীদের দক্ষতা নিশ্চিত করে যে, মুখের অভিব্যক্তি থেকে পোশাক পর্যন্ত প্রতিটি বিবরণই নিখুঁত।

ঐতিহ্যবাহী কৌশলঃ এই প্রক্রিয়াটি বেশ কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথমে, মূর্তির ভিত্তি তৈরি করার জন্য একটি খড়ের কাঠামো তৈরি করা হয়। তারপরে, এটি আকৃতি দেওয়ার জন্য মাটির স্তর প্রয়োগ করা হয়। শুকিয়ে গেলে, মূর্তিটি জীবন্ত রঙে আঁকা হয়। অবশেষে, অলঙ্কার এবং পোশাক মূর্তির চেহারা সম্পূর্ণ করে। প্রতিটি ধাপে নির্ভুলতা এবং অনুশীলন প্রয়োজন।

সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণঃ দুর্গাপুজো শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়; এটি একটি সম্প্রদায় উৎসব। স্থানীয় ক্লাব এবং সংস্থাগুলি তাদের মণ্ডপের জন্য এই মূর্তিগুলি কমিশন করে। সম্পূর্ণ সম্প্রদায় উৎসবের চারপাশে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা এবং সংগঠিত করার কাজে অংশগ্রহণ করে।

অর্থনৈতিক প্রভাবঃ উৎসবটি কলকাতার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করে। এটি মূর্তি তৈরি এবং সম্পর্কিত কার্যকলাপগুলিতে জড়িত হাজার হাজার শিল্পী এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থান করে। অতিরিক্তভাবে, এটি ভারত এবং বিদেশ থেকে পর্যটকদের আকর্ষণ করে, স্থানীয় ব্যবসায়গুলিতে অবদান রাখে।

পরাম্পরায় রক্ষণাবেক্ষণঃ আধুনিক প্রভাব সত্ত্বেও, কুমারটুলির মূর্তি তৈরিতে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। শিল্পীরা তাদের দক্ষতা প্রজন্মের পর প্রজন্মে হস্তান্তর করে, এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যটির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।

কলকাতার দুর্গাপূজা শুধুমাত্র একটি উৎসব নয়; এটি একটি কারুশিল্প এবং ঐতিহ্যের প্রমাণ। কুমারটুলির শিল্পীদের উৎসর্গ প্রতি বছর এই উৎসবটি জীবন্ত করে তোলে, স্থানীয় এবং পর্যটকদের মন মোহ করে।