নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সাত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আজ সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট। চার্জশিটের বক্তব্য ধরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে এই সাত প্রশ্নের সদুত্তর চান ন্যায় বিচারের দাবিতে আশি দিনের বেশি সময় ধরে রাস্তায় থাকা জুনিয়র চিকিৎসকেরা। কী সেই সাত প্রশ্ন? ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নিহতের এন্ডোসারভাইকাল ক্যানালে সাদা, গাঢ়, চটচটে তরলের অস্তিত্ব পাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে। এই তরলের ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে কি? হলে রিপোর্ট কোথায়? চার্জশিট অনুযায়ী, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তিলোত্তমার শরীরের উপর ভাগে ধৃত সঞ্জয় রাইয়ের লালারস থাকার অস্তিত্ব মিলেছে। কিন্তু, লালারসের ডিএনএ পরীক্ষার উল্লেখ থাকলে সাদা, গাঢ় তরলের ডিএনএ পরীক্ষার উল্লেখ নেই কেন? ব্লু-টুথের সূত্র ধরে গ্রেফতার হয় সঞ্জয়। চার্জশিট অনুযায়ী, চেস্ট মেডিসিনের সিসি ক্যামেরায় ভোর ৪.০৩ মিনিটে ওয়ার্ডের ভিতরে যায় সঞ্জয়। সেই সময় তার গলায় ব্লু-টুথ ইয়ার ফোন ছিল। ৪.৩২ মিনিটে ওয়ার্ড থেকে বেরনোর সময় সঞ্জয়ের গলায় ইয়ার ফোন দেখা যায়নি। তবে চার্জশিটেই বলা হয়েছে, ৪.৩১ মিনিটে ওয়ার্ড থেকে ক্যামেরার দিকে হেঁটে আসার সময় আবার ওয়ার্ডে ফিরে যায় সঞ্জয়। এক মিনিট পরে ৪টে ৩২ মিনিটে সঞ্জয়ের গলায় ব্লু-টুথ না থাকার কথা চার্জশিটে উল্লেখ থাকলেও ৪টে ৩১ মিনিটে সঞ্জয়ের গলায় ব্লু-টুথ ছিল কিনা তার কোনও উল্লেখ চার্জশিটে নেই। কেন? সেই প্রশ্ন জুনিয়র ডাক্তারদের।
চার্জশিট অনুযায়ী, ৯ অগস্ট ভোর ৩টে ২০ মিনিটে আরজি কর হাসপাতালে পৌঁছায় সঞ্জয়। ট্রমা কেয়ার বিল্ডিংয়ে তাঁর প্রবেশ ৩.৩৪ মিনিটে। দু’মিনিট পর ট্রমা কেয়ার থেকে বেরিয়ে যায় সঞ্জয়। এরপর ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ে চেস্ট মেডিসিনের সিসি ক্যামেরায় ৪টে ০৩ মিনিটে তাকে দেখা যায়। মধ্যবর্তী সময় সঞ্জয়ের অবস্থান চার্জশিটে স্পষ্ট নয়। ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের পাঁচতলায় সঞ্জয় কী করছিল? একইসঙ্গে ৯ অগস্ট অটোপসি থেকে নমুনা নেওয়া হলেও কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হল ১৪ অগস্ট। কেন? এই প্রশ্নও তুলছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
অন্যদিকে চার্জশিটে খুব নির্দিষ্টভাবে ঘটনার পরবর্তী সময়সরণির উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার দিন দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে তিলোত্তমা বাবা-মা আরজি কর পৌঁছান বলা হয়েছে। তবে তাঁরা আরজি কর পৌঁছনোর পরের ঘটনাক্রমের উল্লেখ নেই। তাঁরা আসার পর কী হয়েছিল, কেন ৩ ঘণ্টা ধরে মেয়ের মৃতদেহের কাছে বাবা-মা যেতে পারলেন না উল্লেখ নেই তারও। সদুত্তর খুঁজছেন ডাক্তারেরা। পাশাপাশি কী কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষ শুরুতে এফআইআর করেননি? কেন তিলোত্তমার মা- বাবাকেই এফআইআর করতে হল? সেই প্রশ্নও সামনে রেখে রাস্তায় নামছেন আন্দোলনকারীরা।