নিজস্ব সংবাদদাতা: একসঙ্গে দুই আইনজীবী করলেন জামিনের আবেদন। আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতে ক্ষোভের মুখে পড়ে শেষে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। একই ভুল যাতে ভবিষ্যতে আর না করা হয়, সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ দিলেন বিচারক।
চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল সিবিআই গ্রেফতার করে নিয়ে যায় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। গ্রেফতারির পর থেকে একাধিকবার তাঁর জামিনের আরজি করেছেন আইনজীবীরা। গত ১ আগস্ট জীবনকৃষ্ণ সাহার আইনজীবীরা তাঁর জামিনের আবেদন করেন। এদিকে তার আগেই কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন তৃণমূল বিধায়কের অন্য আইনজীবী। হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করা থাকলে একই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করা যায় না, তাই সিবিআই আদালত জীবনকৃষ্ণ সাহাকে শোকজ করেছিল। শুক্রবার জীবনকৃষ্ণকে ফের আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালতে দাঁড়িয়ে জীবনকৃষ্ণ সাহার আইনজীবী বলেন যে তাঁরা জানতেন না কলকাতা হাইকোর্টে জীবনকৃষ্ণেরই অন্য আইনজীবী জামিনের আবেদন করেছেন। তাই জীবনকৃষ্ণ সাহা ও তাঁর আইনজীবী সিবিআই আদালতের বিচারকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে বলেন, 'অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে। এভাবে জামিনের আবেদন করা ঠিক নয়। এটি আইন বিরোধী'।
রেগে গিয়ে জীবনকৃষ্ণ সাহার ১০০০ টাকা জরিমানা ধার্য করেন বিচারক। ওই টাকা জেলা লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির কাছে জমা দিতে হবে তাঁকে। বিচারক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে বলেন যে এই ধরনের কাজ যাতে তিনি আর ভবিষ্যতে না করেন। তাহলে বিধায়কেরই অসুবিধা হবে। বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা ফের আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কলকাতা হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতের আইনজীবীকে নিজেদের মধ্যে সংযোগ বজায় রেখে চলারও নির্দেশ দেন বিচারক।
টানা ৬৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর গ্রেফতার হন জীবনকৃষ্ণ। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হিসেবে এখনও পর্যন্ত যতজন তৃণমূল বিধায়ক ও নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে সিবিআইকে সবচেয়ে বেশি নাকানিচোবানি খাওয়ালেন তিনি। সিবিআই গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে অসুস্থতার কথা বলে বাথরুম যাওয়ার নাম করে দুটি মোবাইলও বাড়ির সামনের ডোবায় ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। তাতেই সন্দেহ আরো প্রকট হয়। খোঁজাখুঁজি করে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায় সেই মোবাইল। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যের পরে জীবনকৃষ্ণই তৃতীয় বিধায়ক, যাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।