নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আরজি কর কাণ্ডের ঘটনার ৩৩ দিন অতিক্রান্ত। তবে এখনও বিচার পায়নি নির্যাতিতা। বরং তার বদলে মুখ্যমন্ত্রী সকলকে উৎসবে পুজোয় ফিরে আসার আহ্বান দিয়েছেন। তবে তার এই অনুরোধের বিরোধিতা করেছেন সাধারণ মানুষ থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা। তাদের দাবী যে, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারা কোনও রকম উৎসবে যোগ দেবেন না।
প্রসঙ্গত যে, গত মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় করুণাময়ী থেকে মিছিল করে স্বাস্থ্যভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। স্বাস্থ্য ভবন চত্বরে কাল হাজির ছিলেন আরজি কর কাণ্ডের নির্যাতিতার বাবা মাও। এই সময়ে ফের একবার সরব হলেন নির্যাতিতার বাবা মা। তাদের দাবী যে, '' তোমরা শয়-শয় ছেলেমেয়ে রাস্তায় নেমেছো আজ আমার মেয়ের জন্য। প্রশাসন আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে তোমাদের। আমি আর বাড়িতে বসে থাকতে পারলাম না। আসার সময় দেখলাম রাস্তায় দাঁড়িয়ে খিচুরি খাচ্ছ তোমরা, এটা দেখে খুব কষ্ট পেয়েছি। ডাক্তারদের ভগবানের চোখে দেখা হয় আর সেই ডাক্তাররা আজ রাস্তায় এভাবে আন্দোলন করছে। আমি চাইব আমার পাশে তোমরা এভাবেই থাকো। তোমরাই আমার শক্তি। "
তারা মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের কথায়, '' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। প্রথম থেকেই বলে আসছি আমার মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তা একা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। এতে অনেকে জড়িত। আমরা গোটা চেস্ট মেডিসিন বিভাগকে দায়ী করছি কিন্তু শুরু থেকেই সেই সঞ্জয় রায়কে দোষী প্রমাণ করে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করেছে সরকার।"
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, দেশ জুড়ে আজ আরজি করে তরুণী ডাক্তারকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই নক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ থেকে নেতামন্ত্রী সকলেই ধিক্কার জানিয়েছেন। আরজি কর কাণ্ডের দৌলতে এবার সামনে এসেছে হাসপাতালের মধ্যে ঘটে চলা নানা দুর্নীতির তথ্য। বেআইনি ওষুধ বিক্রি থেকে শুরু করে মর্গে শবদেহের বেআইনি লেনদেনসহ একাধিক আর্থিক দুর্নীতির তথ্য।
এ ক্ষেত্রে আরও উল্লেখ্য যে, রাজ্য বিধানসভায় কয়েকদিন আগেই পেশ হয়েছে ধর্ষণ বিরোধী বিল। এই বিলকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলগুলিই।
বলা বাহুল্য যে, এই ঘটনা সারা দেশ তো বটেই বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের মনেও ক্ষোভের আগুন জ্বেলে দিয়েছে।