মুখ্যমন্ত্রীর নতুন বছরের শুভেচ্ছা, কিন্তু মন খারাপের আবহে!

চাকরি হারিয়ে কান্নায় ভাসছেন ২৬ হাজার শিক্ষক

author-image
Jaita Chowdhury
New Update
Mamata

 নিজস্ব সংবাদদাতা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৬ হাজার শিক্ষক হারিয়েছেন তাঁদের স্বপ্নের চাকরি। এই রায়ের পর থেকেই রাজ্যের স্কুলগুলোয় ছড়িয়েছে তীব্র উদ্বেগ আর দুঃখের সুর। ঠিক এই সময়ই নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে পৌঁছল 'নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা'। প্রতি বছর এই বার্তা মোবাইলে এসএমএস করে পাঠানো হলেও, এই প্রথমবার তা চিঠি আকারে পাঠানো হয়েছে। তবে এই শুভেচ্ছাবার্তা পড়েও মন ভালো হয়নি শিক্ষকদের।  

Mamata Banerjee and Junior doctors meeting

একদিকে নতুন বছরের আনন্দ, অন্যদিকে সহকর্মীর চাকরি হারানোর যন্ত্রণা — এই দ্বিধায় জর্জরিত রাজ্যের স্কুল শিক্ষক সমাজ। নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, "এই চিঠির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, কিন্তু এই মুহূর্তে এই বার্তা হৃদয়বিদারক। আমাদের স্কুল একটাই পরিবার, সেই পরিবারের একাধিক সদস্য আজ চাকরিহীন। এই পরিস্থিতিতে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানো কঠিন।"  

 

পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজাও ভাগ করে নিলেন দুঃখের কথা। তাঁর কথায়, "আমাদের স্কুলের রসায়ন শিক্ষকের চাকরি সহ একাধিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। এখন নতুন পরিকল্পনা তৈরি করতে হচ্ছে। বেতন দেওয়ার বিষয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে। পরীক্ষার মরসুম পার হলেও, নববর্ষের পর থেকে স্কুল খোলার পর কী পরিস্থিতি হবে — তা নিয়েই চিন্তায় রাত কাটছে।"  

 

এই সংকটের মুখে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনও সরকারের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি জানিয়েছেন, "এই নববর্ষে আমরা ভালো নেই। যোগ্য শিক্ষকরা বঞ্চিত, ২৬ হাজার মানুষের চাকরি বাতিল হয়েছে। সরকার অবিলম্বে যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ করুক এবং যাঁরা ন্যায়সঙ্গত ভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে নিক। তাহলেই হয়তো আমরা আবার খুশি মনে নববর্ষ উদযাপন করতে পারব।"  

 

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারীর কটাক্ষ, "কোটি কোটি টাকা খরচ করে নববর্ষের শুভেচ্ছা পাঠানোর দরকার নেই। আগে শিক্ষার কাঠামো ঠিক করুন। তাহলে এই ধরনের বার্তার দরকারই পড়বে না। শিক্ষাক্ষেত্রের ভাঙন থামালেই শিক্ষকদের মনও ভালো থাকবে।"