কলকাতার ব্ল্যাক হোল

খুলে গেল কুখ্যাত ব্ল্যাক হোলের দরজা। সেই দরজার ওপাশে সিঁড়ি নেমেছে। সিঁড়ির শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হচ্ছে একটি ছোট টানেল। ইতিহাস বলে, ব্রিটিশ সেনা অফিসার জন হলওয়েলের সময় এই টানেলটি একটি গার্ড হাউস ছিল।

author-image
SWETA MITRA
New Update
cover Beng.jpg

অভিজিৎ নন্দী মজুমদার

১৭৫৬ সালের জুন মাস। খুলে গেল কুখ্যাত ব্ল্যাক হোলের দরজা। সেই দরজার ওপাশে সিঁড়ি নেমেছে। সিঁড়ির শেষ প্রান্ত থেকে শুরু হচ্ছে একটি ছোট টানেল। ইতিহাস বলে, ব্রিটিশ সেনা অফিসার জন হলওয়েলের সময় এই টানেলটি একটি গার্ড হাউস ছিল। জন হলওয়েলের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ১৭৫৬ সালের জুন মাসে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার সেনাবাহিনী ফোর্ট উইলিয়াম আক্রমণ করেছিল। যেখানে আজ GPO রয়েছে, ব্রিটিশ আমলে সেখানেই ছিল ফোর্ট উইলিয়াম।

সেই সময় ব্রিটিশ সৈন্যরা সিরাজ-উদ-দৌলার ৫০ হাজার সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হয় এবং অনেক ব্রিটিশ সৈন্য গঙ্গা নদী পেরিয়ে পালিয়ে যায়। দুই দলের এই লড়াইয়ের পরে সিরাজের সৈন্যদের হাতে বেশ কিছু ভারতীয় ও ব্রিটিশ সৈন্য ধরা পড়ে যায়। তাদের একটি ছোট ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়, যে ঘরের আকৃতি ছিল ১৪ ফুট / ১৮ ফুট। 

গরমের মধ্যে সেই ছোট ঘরের মধ্যে বন্দী সৈন্যদের খাবার বা জল দেওয়া হয়নি। পরদিন সকালে যখন ওই ঘরের দরজা খোলা হয়েছিল, তখন বেশিরভাগ বন্দী শ্বাসরোধে কিংবা অসহ্য গরমের কারণে মারা গিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন হলওয়েল। পরবর্তীকালে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের পর প্রথম ফোর্ট উইলিয়াম ময়দানে স্থানান্তরিত হয়। 

১৮৬৪ সালে ওয়াল্টার গ্রেনভিল জিপিও'র ডিজাইন করেছিলেন। কিন্তু যে জমিতে এটি দাঁড়িয়ে আছে, তা প্রথমে ফোর্ট উইলিয়ামের জায়গা ছিল। ১৭৫৬ সালের জুন মাসে সেখানেই আক্রমণ চালিয়েছিল  সিরাজ-উদ-দৌলার সেনা। সেই ঘটনার পর ২৬৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ের তীব্র গরম এবং আর্দ্রতা মনে করিয়ে দিল সেই ট্র্যাজেডি, যার নাম 'কলকাতার ব্ল্যাক হোল'।