নিজস্ব সংবাদদাতাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টে তারা চার্জশিটের কপিও যুক্ত করেছে। ফলস্বরূপ একটি বড় চক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। সিবিআইয়ের চার্জশিটেই নিয়োগ দুর্নীতির এক বড় চক্রের সন্ধান দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টকে একটি বড় তথ্য জানিয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে যে, টাকার বিনিময়ে প্রার্থীর তালিকায় নাম উঠে যেত অযোগ্যদের। তাদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ভুয়ো ওয়েবসাইটও। আর সেই ওয়েবসাইটের ওপর নির্ভর করেই দুর্নীতির ওই চক্র কাজ করছিল। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, ৩১০ জন অযোগ্য প্রার্থী, যাদের মধ্যে কেউই টেট পাস করেননি তাদের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ চাকরি দিয়েছিল।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতেই ২০১৪ সালে প্রাথমিক নিয়োগ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট জমা করেছে সিবিআই। রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, ২০১৭ সালে ৭৫২ জনের চাকরি প্রার্থীর একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। যাদের মধ্যে কেউই টেট পরীক্ষায় পাশ করেননি। সিবিআই রিপোর্ট জানিয়েছে, তারা প্রত্যেকেই অযোগ্য প্রার্থী। এই অযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে ৩১০ জনকে চাকরি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
সিবিআই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতির এজেন্টদের কাজে লাগিয়ে মূলত টিচার্স ট্রেনিং কলেজের মালিকদের কাছ থেকে টাকা তোলা হত। অন্যদিকে টেট প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কুন্তল ও তাপসের পকেটে বিপুল পরিমাণ টাকা গিয়েছে বলে দাবি করে সিবিআই। তদন্তে জানা গিয়েছে, তাপস মণ্ডলের ৮ জনের মতো সাব এজেন্ট ছিলেন। ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১৪১ জনের কাছ থেকে ৪ কোটি ১২ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তাপস। যার মধ্যে থেকে কুন্তল ঘোষকে দিয়েছিলেন ৫ কোটি ২৩ লক্ষ।
প্রসঙ্গত, কুন্তল নিজের তিনজন এজেন্টের মাধ্যমে ৭১ জন চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের নাম চলে আসত www.wbtetresults.com নামের ভুয়ো ওয়েবসাইটে। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সিবিআইয়ের তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। জানা গিয়েছে, এই বিষয় নিয়ে পরবর্তী শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট বিশেষ পদক্ষেপ নিতে পারে।