নিজস্ব সংবাদদাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছর জুলাই মাস থেকে জেলেই রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করে তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তারপর এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও জেলেই থাকতে হচ্ছে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিবকে।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফতারির ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। তারপর থেকেই আঙ্গুল উঠতে শুরু হয়েছে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে। পার্থকে গ্রেফতারির পর কোমর বেঁধে দুর্নীতির তদন্তে নেমে যায় ইডি এবং সিবিআই। এরপর দুর্নীতির অভিযোগে একে একে গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হন শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিক, নেতা ও মন্ত্রী।
এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যসহ জেলবন্দি রয়েছেন আরও বহুজনা। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির হাত কতদূর বিস্তৃত তা জানা যাচ্ছে না এখনও। এই আবহেই গতকাল শিক্ষক দিবসের দিন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করে বসলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একহাত নিয়ে মিডিয়ার সামনে শুভেন্দু বলেন, "এই মোটা পার্থ, চোর পার্থ, শিক্ষক শব্দটাকেই গোলমাল করে দিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের কোমল মনের ওপর প্রভাব পড়ছে''। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু বলেন, ''আপনারা বুম নিয়ে ঢুকে যাচ্ছেন স্কুলে। ভুয়ো শিক্ষকের কাছে। ভুয়ো শিক্ষক ছুটছে। আপনারা ছবি দেখাচ্ছেন। মুখ চাপা দিচ্ছি, রুমাল বেঁধে দিচ্ছে। আর এই সব কিছুর জন্য সামগ্রিকভাবে শিক্ষক শব্দের অমর্যাদা হচ্ছে''। শিক্ষক দিবসের দিন সাড়া ফেলে দিল বিরোধী দলনেতার মন্তব্য। কিছুদিন আগেই আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে সিবিআই নিজে আবার দাবি করে যে নিজের নাকতলার বাড়িতে বসেই লিস্ট তৈরি করতেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানা গেছে যে তালিকায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেই। তদন্তকারীরা বলছেন যে অবাধে দুর্নীতি করতে নিজের পছন্দের লোকেদের নানা পদে বসিয়ে দিয়েছিলেন পার্থ। বাড়ির নিচে একটা অফিস খুলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সুবিরেশ ভট্টাচার্যকে সেখানে ডেকে তালিকা তাঁর হাতে তুলে দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অভিযুক্ত প্রসন্ন রায় ও প্রদীপ সিংরাও ঘন ঘন দেখা করতে পি কথা বলতে আসতেন সেখানে, দাবি করছে সিবিআই। পুজো আসছে। এই দুর্নীতির জেরে নাকতলা উদয়ন সংঘ থেকে এবার পাকাপাকিভাবে বাদ পড়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।