নিজস্ব প্রতিবেদ : জলের তলায় গ্রামের পর গ্রাম! এই দৃশ্য নতুন নয়, প্রতিবছরই ফিরে আসে। চলতি বছরে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত অব্যাহত। ডিভিসি-র জল ছাড়ার পর 'ম্যানমেড বন্যা'র অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জল ছাড়া নিয়ে সংঘাতের মাঝে, ঝাড়খণ্ড সীমানা সিলের ঘোষণা করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা ও রাজ্যপালকে চিঠি দেব। ঝাড়খণ্ড সীমানায় হাজার হাজার গাড়ি আটকা পড়েছে। যদি ঝাড়খণ্ডের গাড়ি আটকানো হয়, তাহলে পেঁয়াজ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন।" তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, "ডিভিসি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেখান। বাংলার ৮ জেলা অন্ধকারে ডুবে যাবে।"
বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানার ডুবুরডি চেক পোস্টে পণ্যবোঝাই ট্রাকের দীর্ঘ সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনেক ট্রাকে পচনশীল পণ্য রয়েছে, ফলে দীর্ঘ অপেক্ষায় বিরক্ত ট্রাক চালকরা। তারা ট্রাক ছাড়ার দাবিতে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক বচসায় লিপ্ত হন। এই পরিস্থিতিতে সেখানে পৌঁছান কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার। তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলার পর বলেন, "আমি এসেছি যাতে তারা বেরোতে পারে। এখন উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে কাঁচামাল, ফল ও দুধের বের হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।"
অবশেষে লিখিত নির্দেশিকা দেখে শান্ত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি কেন্দ্র সরকারের অধীনে থাকা ডিভিসি এবং ঝাড়খণ্ড সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন এবং তাঁর নির্দেশে আগামী ৩ দিন বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য প্রশাসন। তিনি বলেন, "৩ দিন ঝাড়খণ্ডের বর্ডার বন্ধ থাকবে। গাড়ি ঢুকলেই জলে ডুবে যাবে, আমি এটা চাই না।"
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বাংলা-ঝাড়খণ্ড বর্ডার সিল করার নির্দেশ দেওয়া হয় ডুবুরডি চেকপোষ্টে। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী কালকে হুঙ্কার দেওয়ার পরে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার। আমি নীতীন গডকড়ি, অমিত শাহজিকে এবং রাজ্যপালকে লিখব, যে দ্রুত ওখানে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।"