নিজস্ব সংবাদদাতাঃ কলকাতা হাইকোর্ট আজ এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করেছে। ভোটের মধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বড় ধাক্কা রাজ্যের ২৫ হাজার ৭৫৩জনের চাকরি বাতিল করেছে হাইকোর্ট। সোমবার আদালতের তরফে জানান হয়, ‘২০১৬-র সমস্ত নিয়োগই অবৈধ'। নির্দেশ বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের। মেয়াদ উত্তীর্ণদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরতের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ নিয়ে রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক মহলে তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে অনেকেই অনেক মন্তব্য করেছেন। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, “যাঁরা যোগ্য প্রার্থী তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তাঁদের ঠকিয়েছেন এই মিথ্যাচারী মুখ্যমন্ত্রী। বঞ্চিতদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান সকলে আছেন। সকলের উচিত মমতাকে বয়কট করা। ওঁকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে।”
রায়গঞ্জের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বললেন, “আমিও বলে রাখি যাদের চাকরি বাতিল হল তাদের বলছি জীবনের ঝুঁকি নেবেন না, হতাশ হবেন না। আমরা আপনাদের পাশে আছি। যতদূর দরকার যাব। রায় বেআইনি, আদালতে যাব। আরো দশ লক্ষ সরকারি চাকরি প্রস্তুত। জেলে পাঠাবেন? আমি তৈরি।”
অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায় নিয়ে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটি সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ রায়। এই জাজমেন্ট থাকতে পারে না। কারও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। ৭৫ শতাংশ তো অভিযোগে ছিল না। তাহলে কী করে হয় এই নির্দেশ? ভারত্যীয় জনতা পার্টি আসলে চাকরি খেতে চাইছে। দেশে এত বেকার তো রয়েছে, সেখানে বিজেপি সবসময়ই চায় কাজ চলে যাক। বাঙালিদের চাকরি চলে যাক সেটাই বিজেপির মূল উদ্দেশ্য। এই জাজমেন্ট সুপ্রিম কোর্টে গেলে পাঁচ মিনিটে স্টে হয়ে যাবে।”
এরপরই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি সমস্ত শিক্ষকদের উদ্দেশে বলছি আপনারা নিশ্চিন্তে বসে থাকুন। এই রায় সম্পূর্ণ ভুল রায়। এই রায় সুপ্রিম কোর্টে উঠলে অবিলম্বে স্থগিত হবে।”
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে পাল্টা বক্তব্য পেশ করেছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন জোচ্চোরদের দালাল। প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে উনি কোথা থেকে ওঁর আইনি ডিগ্রি এনেছেন। ওঁর যোগ্যাতাই নেই। তাই এসব কথা বলছেন। চাকরির টাকার ভাগ পেয়েছেন নিশ্চয়ই। এসব নির্লজ্জদের চুপ করে যাওয়া উচিত। সুপ্রিম কোর্টে নিশ্চয়ই স্টে হতে পারে, কিন্তু সেটা সুপ্রিম কোর্ট বলবে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নয়।”