‘আমি নিরপরাধ’! এবার স্বপ্নদীপ হত্যাকাণ্ডে মুখ খুলল সৌরভ

বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচে প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। কোন কারণে তার মৃত্যু হয় সেটা সামনে না এলেও প্রাক্তনীদের অত্যাচারকে দায়ী করছেন ছাত্রের বাবা।

author-image
Anusmita Bhattacharya
আপডেট করা হয়েছে
New Update
WhatsApp Image 2023-08-12 at 8.28.06 PM

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: তিনি 'নির্দোষ'। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে কি না এমন প্রশ্ন করলে ঠিক এমনই দাবি করলেন যাদবপুরকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরী। শনিবার সৌরভকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘আমি নিরপরাধ'। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার রাতে একটানা জেরা করা হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং ওই হস্টেলের আবাসিক সৌরভকে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল স্বয়ং জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে জানা গেছে। এর পরে রাতে সৌরভ গ্রেফতার হন। পুত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সৌরভের নামে থানায় অভিযোগ করেছিলেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুন্ডু। সেই খুনের অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা রুজু করে সৌরভকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।

শনিবার সৌরভকে আলিপুর আদালতে তোলার পর আগামী ২২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদলতে সৌরভের আইনজীবী অরিন্দম দাস দাবি করেন যে সৌরভ স্বপ্নদীপের সহপাঠী নন, রুমমেট বা বন্ধুও নন। সৌরভের ফোন থেকে ফোনও করা হয়নি। যার ফোন থেকে ফোন করা হয়, সেটা দেখা হোক। স্বপ্নদীপের বাবা সৌরভকে চেনেন না তবে ছেলের থেকে শুনেছেন বলেই দাবি করেন আইনজীবি। আবার আদালতে সরকারি কৌঁসুলি সৌরিন ঘোষাল জানান যে তিন জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার প্রয়োজন রয়েছে। ২টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সৌরভের ফোনও রয়েছে। ওই ফোনের ‘কল ডিটেলস্’ খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি এ-ও বলেন যে একটা অত্যাচারের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে কারণ যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর নামও আসছে।

বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপের দেহ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। Ragging- এর কারণে মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রের পরিবার। স্বপ্নদীপের বাবা পুলিশকে জানান যে গত ৩ আগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে একটি চায়ের দোকানে সৌরভের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ জানান যে ২০২২ সালে তিনি এমএসসি পাশ করেন। সৌরভের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়। স্বপ্নদীপের বাবাকে সৌরভই ‘অভয়’ দেন যে হস্টেলে গেস্ট হয়ে থাকা যায়। নিম্নবিত্ত পরিবার হওয়ায় সৌরভের কথায় বল পেয়েছিলেন রামপ্রসাদ। সৌরভের হাত ধরে অনুরোধ করেন যাতে ছোট ভাইয়ের মতো স্বপ্নদীপকে দেখেন তিনি। তিনি এও জানান যে সৌরভই যাদবপুরের মেন হস্টেলে মনোতোষ নামে এক ছাত্রের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন স্বপ্নদীপের। মনোতোষ ১০৪ নম্বর রুমে থাকেন। স্বপ্নদীপ থাকতেন ৬৮ নম্বর রুমে। স্বপ্নদীপের রুমমেট ছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের কল্লোল ঘোষ।