নিজস্ব প্রতিবেদন : টানা ৪২ দিন কর্মবিরতির পর কিছুদিন আগে আংশিক কাজে ফিরেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু দশ দিনের মাথায় আট ঘণ্টার জেনারেল বডি মিটিংয়ে দশ দফা দাবি তুলে ফের পূর্ণ কর্মবিরতির ঘোষণা করলেন তাঁরা। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে, যদিও প্রথম দফায় জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে সম্পূর্ণ সায় ছিল, এবার সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ তাঁদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। হাসপাতালের পরিবেশ এবং রোগীদের সেবার কথা বিবেচনা করে এই অনুরোধটি এসেছে, যা সংকটের সময় চিকিৎসক সমাজের একতা ও সমঝোতার প্রতীক।
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "আমরা সিনিয়র ডাক্তাররা রাস্তার আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছি এবং জুনিয়র ডাক্তারদের পরামর্শ দিচ্ছি। জুনিয়র ডাক্তাররা ইতিমধ্যে কর্মবিরতি দিয়েছেন, কিন্তু সিনিয়ররা সেটার ঘাটতি পূরণ করতে বাড়তি কাজ করেছেন। সরকার সাধারণ গরিব মানুষের ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করছে, তাই আমাদেরও কৌশল অবলম্বন করা উচিত। কর্মবিরতির পরিবর্তে আমরা কীভাবে কাজ করে আন্দোলনকে তীব্র করতে পারি, সেটাই ভাবতে হবে।" অপরদিকে, আরজি কর এক্স-স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের অনুরোধ, রোগীদের স্বার্থকে বিবেচনা করে জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের কাজে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন।"
চিকিৎসক ও আরজি কর এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তাপস ফ্রান্সিস বিশ্বাস বলেন, "আমি চাই রোগীদের স্বার্থে চিন্তা করা হোক, কারণ রোগীদের অসুবিধা হচ্ছে। জুনিয়র ডাক্তারদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।" সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সামনে দাঁড়িয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শেষ করে কাজে ফিরে গেছেন। তিনি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে হামলার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেননি। এর পরেই, সোমবার রাতভর বৈঠক করে নিরাপত্তা এবং অন্যান্য দাবিতে রাজ্যজুড়ে ফের কর্মবিরতির ঘোষণা করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
প্রথম দফায় জুনিয়র চিকিৎসকদের লাগাতার আন্দোলনের চাপে পুলিশ কমিশনার, ডিসি নর্থ, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর কর্মবিরতি উঠেছিল, কিন্তু এখন আবার কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্টর্স ফ্রন্টের তরফে এই পদক্ষেপটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।