নিজস্ব প্রতিবেদন : আর্থিক দুর্নীতির মামলায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে CBI। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর অধ্যক্ষ থাকাকালীন কলেজের মর্গে বেনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার CBI তদন্তের অংশ হিসেবে ফরেন্সিক মেডিসিনের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান সোমনাথ দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এই জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা তদন্তে নতুন মোড় নিয়ে এসেছে।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সোমনাথ দাস CBI-কে জানান যে, তাঁর বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে সন্দীপ ঘোষের নির্দেশ ছিল। ৫ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত ENT বিশেষজ্ঞদের একটি ওয়ার্কশপের জন্য 'ফ্রেশ' মৃতদেহ প্রয়োজন ছিল, কিন্তু সোমনাথ দাস মৃতদেহ সরবরাহে অস্বীকার করেন। তিনি স্পষ্ট করে লেখেন যে, ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ কর্তৃক আনা মৃতদেহ ওয়ার্কশপে ব্যবহার করা যাবে না। সোমনাথের এই অবস্থানের কারণে সন্দীপ ঘোষের 'ইচ্ছাপূরণ' না হওয়ার জেরেই তাঁর বদলি করা হয়। পরে মর্গ থেকে পাঁচটি মৃতদেহ অ্যানাটমি বিভাগে পাঠানো হয়, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে যে, দান করা মৃতদেহের পরিবর্তে ময়নাতদন্তের মৃতদেহ ব্যবহার করা হয়েছিল, এবং এই ঘটনার বিষয়ে মৃতদেহের পরিবারের কোনো অনুমতি ছিল না।
এই ঘটনার পর সোমনাথ দাসকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে বদলি করা হয়। অভিযোগ উঠেছে যে, স্বাস্থ্যভবনে মৃতদেহের পরিবারের সদস্যদের জানানো হলেও তদন্তের অগ্রগতি এখনো পর্যন্ত হয়নি। এই পরিস্থিতি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ব্যবস্থাপনার ওপর প্রশ্ন তুলেছে এবং এ ব্যাপারে CBI-এর তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
নিয়ম অনুসারে, ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশের কাছ থেকে আসা মৃতদেহ ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার কথা নয়। কারণ, এতে 'মেডিকো লিগাল' বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং মৃতদেহের উপর অধিকার থাকে পুলিশ ও পরিবারের। কোর্ট অর্ডার ছাড়া ওই দেহকে অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যায় না।