নিজস্ব সংবাদদাতা: পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন অতীত চ্যাপ্টার। নাকতলা উদয়ন সংঘের নয়া মুখ হলেন অরূপ বিশ্বাস। ২০২১ সালের দুর্গাপুজো পর্যন্ত নাকতলা উদয়ন সংঘ বলতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজো বলেই পরিচিতি ছিল। তবে গত বছর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন এই শিক্ষামন্ত্রী। ফলে কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিল দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম চর্চিত নাকতলা উদয়ন সংঘ। প্রায় এক বছর পর, এবার রাজ্যের আরেক হেভিওয়েট মন্ত্রী এগিয়ে এলেন নাকতলা উদয়ন সংঘকে রক্ষায়। অর্থাৎ পুজো থাকল জোড়াফুলেই।
গত মাসে যখন ধুমধাম করে নাকতলা উদয়ন সংঘের খুঁটিপুজো হয়, সেখানেই ক্লাবের মুখ্য উপদেষ্টা করা হয় অরূপ বিশ্বাসকে। খুঁটিপুজোর সময়েই কমিটিতে এই নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত বছরে পার্থ না থাকলেও বেশ বড় করেই দুর্গাপুজোর আয়োজন করে নাকতলা উদয়ন সংঘ। পার্থহীন পুজোয় জাঁকজমকে কোনও ত্রুটি দেখা দেবে না বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন পুজো কমিটির কর্তারা। এবার পার্থকে একেবারেই ছেঁটে ফেলল পুজো কমিটি। পার্থকে সরিয়ে উপদেষ্টা হিসাবে স্থান দেওয়া হল টালিগঞ্জ কেন্দ্রের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাসকে। বৃহস্পতিবার থেকে উদয়ন সঙ্ঘের পুজোর नोतुन বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। তা হল, ‘নতুন সূর্যের এই ভোরে আমাদের মাঝে থাকবেন যিনি, তাঁকে আমরা বলি, তুমি আমাদেরই লোক– অরূপ বিশ্বাস, রাজ্যের মন্ত্রী।’
আসলে দেখতে গেলে কলকাতার বেশিরভাগ পুজোর সঙ্গেই হেভিওয়েট নেতাদের নাম জড়িয়ে থাকে। পুজো নিয়ে ঠাণ্ডা লড়াই চলে যেটা অবিশ্বাস করা যাবে না। বিশেষত যত বড় পুজো, তার সঙ্গে তত বড় নেতার নাম জড়িয়ে রয়েছে। শুধু কলকাতা নয়, শহরতলি, মফস্বলের বেশিরভাগ বড় পুজোর সঙ্গেও স্থানীয় নেতা, বিধায়করা থাকেন। প্রথমত, এর ফলে পুজোর জন্য চাঁদা আর বিজ্ঞাপন তুলতে সুবিধা হয়। তাতে আরও বড় করে পুজো আয়োজন করতে পারে ক্লাব। দ্বিতীয়ত, এর মাধ্যমে সেই নেতা-মন্ত্রীরাও জনসংযোগ করার একটি মাধ্যম পেয়ে যান।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে এখন জেলবন্দি শুধু সেটাই নয়, তাঁর ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত পদ থেকেও ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। তিনি নিজেকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণ করলে তবেই দলে ফিরতে পারবেন বলে জানানো হয়ে। তবে এই ‘নির্দোষ’ প্রমাণের আইনগত প্রক্রিয়ায় পার্থবাবু পাশে পাচ্ছেন না দলকে। এদিকে তিনি বারবার দলের প্রতি, নেত্রীর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করছেন।