নিজস্ব সংবাদদাতা: স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেশ কিছু প্রশ্ন। আর সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে তা শেষ হচ্ছে একটি জায়গাতে গিয়েই, ‘আমাদেরও পরিণতি তরুণী চিকিৎসকের মতো হবে না তো!’ অর্থাৎ ৪৩ দিন আগে যে ঘটনা রাজ্য সহ গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, তা যে শুধু একটি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নয়, তা যেন স্বাস্থ্য দফতরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। এর পিছনে কারণটা অনেক বড়, অনেক গভীর।
গত ৯ আগস্টের পর থেকে জুনিয়র চিকিৎসকেরা লাগাতার সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। জাস্টিসের জন্যে গর্জে উঠেছে বারেবারে। আজ তাঁদের এই প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মনে। আজ এই লড়াই গণ আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। তবে এই প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিল সেই তরুণী চিকিৎসকেরও। সেই জন্যেই তো একবার নয়, বারবার ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। তবে স্বাস্থ্য দফতরের অনেকের মতে, তাঁর এই প্রশ্নই তাঁর জীবনে এই ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনলো।
কেন, কেন এমন বলছেন তারা? হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর সহকর্মীরা বার বার সাবধান করার পরেও তিনি মুখ বন্ধ করেননি। দুই সতীর্থকে সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘরে গিয়ে বলে এসেছিলেন, ওষুধের মান এবং কার্যকারিতা তলানিতে। এর বিহিত হওয়া প্রয়োজন। অভিযোগ, সন্দীপ তাঁকে বলেছিলেন, এত বেশি কথা বললে তাঁর আর পাশ করা হয়ে উঠবে না। এই কথোপকথনের সময়ে হাসপাতালের আরও দুই কর্তা সেখানে ছিলেন। তারাই সেদিন দেখেছিলেন সন্দীপের লাল চক্ষু!
তাঁদের কথায়, গত কয়েক মাসে ওষুধের মান নিয়ে বিভিন্ন বিভাগ থেকে ডাক্তার-নার্সরা অহরহ অভিযোগ তুলেছেন। ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু, ওষুধের কার্যকরিতা না থাকায় রোগীর অবস্থা উত্তরোত্তর খারাপ হওয়া – এমন বেশ কিছু অভিযোগ অধ্যক্ষের টেবিলে জমা পড়েছিল। কিন্তু কোনওটি নিয়েই নাড়াচাড়া হয়েছে বলে শোনা যায়নি।
আর তরুণী চিকিৎসক এই সব নিয়েই দেখিয়েছিলেন প্রতিবাদ। একবার নয়, বারবার গর্জে উঠেছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। অথচ ৯ আগস্ট তাঁর সাথেই ঘটে যায় মর্মান্তিক পরিণতি! এটা কি নিছকই কাকতালীয়? নাকি যোগ রয়েছে বহু দূর? এই সব বিষয়ই এবার ভাবাচ্ছে বাকিদের।
তবে প্রত্যেকে একটা বিষয় বলছেন, একজন প্রতিবাদী নিজে শেষ হয়ে প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়ে গেল হাজার জনের মনে…এটাই বোধহয় ‘অভয়া’র নৈতিক জয়!!