নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বিজ্ঞানী বিকাশ সিনহার মৃত্যুতে এবার গভীর শোকপ্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ শুক্রবার এক টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘মহান বিজ্ঞানী বিকাশ সিনহার অকাল প্রয়াণের খবর শুনে শোকাহত। বাংলার এক প্রসিদ্ধ সন্তান, এই প্রতিভাবান পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানী শুধু জ্ঞানের জগতেই নয়, চলমান জনজীবনেও তাঁর অবদান আমাদের গর্বিত করেছে। ২০২২ সালে আমরা তাঁকে আমাদের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার 'বঙ্গবিভূষণ' প্রদান করতে পেরেছিলাম এবং মঞ্চে তাঁর ব্যক্তিগত উপস্থিতি আমাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। ২০২২ সালেও আমরা তাঁকে 'রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার' দিতে পেরেছিলাম। আমি তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, শিক্ষার্থী ও গুণগ্রাহীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।‘
উল্লেখ্য, আজ সকালে কলকাতার মিন্টো পার্কের বাসভবনে জীবনাবসান হয় পদ্মভূষণপ্রাপ্ত এই বিজ্ঞানী বিকাশ সিনহার। গত কয়েক বছর ধরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং তার সঙ্গে ছিল বার্ধক্যজনিত রোগ। বিজ্ঞানীমহল এই সংবাদে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণেই তিনি আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বলে জানা গেছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
বিকাশ সিনহা সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স অ্যান্ড ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টারের পরিচালক ছিলেন এবং ২০০৫ সালের জুন মাসে দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বোর্ড অফ গভর্নরসের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালের জুনে ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার এবং সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের পরিচালক হিসাবে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টারের হোমি ভাবা চেয়ার প্রফেসর ছিলেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্যও ছিলেন। তিনি ২০০১ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১০ সালে পদ্মভূষণ লাভ করেন।
বিকাশ সিনহা মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজপরিবারের সদস্য। তিনি ১৯৬১ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি কেমব্রিজের কিংস কলেজে তার বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য যান। তিনি ১৯৯৪ সালে ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশনের এস এন বোস জন্মশতবার্ষিকী পুরষ্কারের প্রাপক। বিকাশ সিনহা ১৯৭৬ সালে ইংল্যান্ড থেকে ফিরে মুম্বাইয়ের ভাবা পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে যোগ দেন এবং ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টারের পরিচালক ছিলেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞানে তাঁর অসামান্য গবেষণার স্বীকৃতি হিসাবে মর্যাদাপূর্ণ ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো।