নিজস্ব সংবাদদাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে Ragging -এর ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ছাত্র সংসদের (ফেটসু) নেতা অরিত্র মজুমদার ওরফে আলু, সৈকত শিট এবং গৌরব দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে আগেই। অভিযোগ তাঁরা অস্বীকার করেন। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে ওই তিন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগে বলা হয়েছে ছাত্র মৃত্যুতে Ragging -এর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তাঁরাও যুক্ত ছিলেন। এবার ওই তিনজনের শাস্তির সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়াও আরও ৩৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির তরফে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে এবার। তাছাড়া, ৯৫ জন সিনিয়র আবাসিককে হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার সুপারিশ করা হল। এছাড়াও, হস্টেলের এ ১, এ ২, সি এবং ডি ব্লকের সুপারদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি কীভাবে Ragging করা হত সে বিষয়টিও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, সৈকতকে আজীবন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও হস্টেলে ঢুকতে মানা করতে হবে এবং বাকি দু’জনের ক্ষেত্রে পড়া অথবা গবেষণা শেষের পরে আর ক্যাম্পাসে এবং হস্টেলে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কমিটির রিপোর্টে যে ৩৫ জনের শাস্তির কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে ৫ পড়ুয়াকে চারটি সেমেস্টার, ১১ জন পড়ুয়াকে দুটি সেমেস্টার থেকে এবং ১৫ জনকে একটি সেমেস্টার থেকে সাসপেন্ড এবং চার পড়ুয়াকে আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি হস্টেলের এ ১ এবং এ ২ ব্লকের সুপার তপন জানাকে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড এবং সি ও ডি ব্লকের সুপার দ্বৈপায়ন দত্তকে বদলি করা হতে পারে।
কীভাবে Ragging করা হত সেই বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রথম বর্ষের নবাগত পড়ুয়াদের ফুলপ্যান্ট পরে থাকতে হত। ঘুমাতে যাওয়ার সময় এমনকী বাথরুমে করে যাওয়ার সময়ও ফুলপ্যান্ট পরতে হত। চুল সবসময় ছোট করে কাটতে হত। এমনকী সিনিয়রদের সামনে মোবাইলে কথা বলা বা হাতে ঘড়ি পরা নিষিদ্ধ ছিল। এইসবের পাশাপাশি সিনিয়রদের জন্য সিগারেট আনতে হত। তাছাড়া মাঝেমধ্যে তাঁদের ইন্ট্রোর নামে নগ্ন নাচও নাচানো হত। এমনকী অশালীন কথাও বলানো হত জুনিয়রদের দিয়ে। যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃতদেহ নগ্ন অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয়েছিল। কমিটি দাবি করছে যে ওই তিন ছাত্রনেতা র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।