নিজস্ব সংবাদদাতা: বর্ষা প্রায় এসেই গেছে , আর তার সাথে সাথেই বাড়ছে মশাবাহিত রোগগুলি। তার মধ্যে অন্যতম ডেঙ্গি। গত বছর কলকাতায় ভয়াবহ আকার নিয়েছিল এই রোগ এবছর এই সমস্যা ঠেকাতে কিছু বড়ো পদক্ষেপ নিলো কলকাতা পুরসভা।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে , ২০২২ সালে কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ৭৫০০ মানুষ। ইতিমধ্যেই বর্ষা আসার আগেই রাজ্যে ১২০০ জন মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। তাই বাড়িতে যাতে কোনওভাবেই জল না জমে তা নিয়ে বারবার নাগরিকদের সতর্ক করে চলেছে কলকাতা পুরসভা। সতর্কতার বার্তা দিতে কিছু দিন আগে পথে নামেন মাননীয় মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং তার নিজের ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে। বিভিন্ন থানাগুলিতে বাজেয়াপ্ত গাড়িগুলিকে ক্রাশ সাইট-এ নিয়ে গিয়ে নষ্ট করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়ে কলকাতা পুলিশকে। তারপর থেকে শুরু হয়েছে ইন্সপেকশন। তখন দেখা যায় যে সাধারণ বাড়িগুলোতে অনেকেই এই সতর্কতায় কর্ণপাত করছেন না। নানান জায়গায় জল জমিয়ে রেখে দিয়েছেন তারা সেটা ফুলের টব হোক বা ভাঙা আসবাবপত্র, আর সেখানেই জমা জলে বংশবিস্তার করছে ডেঙ্গি মশার লার্ভা। এই সকল অসহোযোগী নাগরিকদের জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কোনও বাসিন্দার বাড়িতে এরকম ভাবে জল জমতে দেখা গেলে তাঁর বিরুদ্ধে পুর-আদালতে মামলা করবে কলকাতা পুরসভা। সেক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা পর্যন্ত করা হতে পারে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর , ইতিমধ্যেই গত পাঁচ মাসে ৩৫ জনকে মোটা টাকার জরিমানা দিতে হয়েছে। প্রসঙ্গত, বর্ষার প্রাক্কালে ১৪৪টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে কলকাতা পুরসভা । প্রথমে জমা জল পরিষ্কার করার জন্য সেই বাসিন্দাকে সতর্ক করছে কলকাতা পুরসভা। এরপরে তারা পুরসভার কথায় কোনো পদক্ষেপ না নিলে ৪৯৬ এ ধারায় নোটিশ পাঠানো হচ্ছে তাঁকে । সেক্ষেত্রেও কাজ না হলে পুর আদালতে মামলা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে ও এই মামলা করছে কলকাতা পুরসভা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে আগে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশা পরিষ্কার জলে ডিম পারত, কিন্তু এখন এই মশা নোংরা জলেও ডিম পাড়ে। আর তাতেই বিপদ আরো বাড়ছে । অনেকেরই বাড়িতে জমে থাকা জল পরিষ্কার করা হয়না বা বাড়ির সামনে খোলা নালায় জল জমে রয়েছে। তাই পুরসভার তরফে বারবার নাগরিকদের সতর্ক করা হচ্ছে। সাধারণ বাড়িতে তো বটেই তালাবন্ধ বাড়িতেও নজর রাখছে পুরসভা যাদের মালিকরা কলকাতার বাইরে অথবা প্রবাসে থাকেন। সে ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা ওই সব বাড়ির তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। বলা হয়েছে , মামলা চলাকালীন উভয় পক্ষকেই আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।