নিজস্ব সংবাদদাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নতুন মোড়। ফের উঠে আসছে এক হেভিওয়েটের নাম। তার মধ্যেই এবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকদের রীতিমতো বকা দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন করেন যে টাকা কোথায় গেল? দুর্নীতির মাথা কে?
গোটা বাংলা যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সেই প্রশ্নই করে বসলেন খোদ বিচারপতি। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে তিনি এই প্রশ্ন করেছেন এই মুহূর্তে। সেই সঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেন যে আধিকারিকরা নীচে থেকে তদন্ত করে উপরে উঠছেন। উপর থেকে তদন্ত করে নীচে নামতে কে বাধা দিচ্ছে তাঁদের সেই প্রশ্নও করলেন বিচারপতি। বলেন, 'একই ধরনের সব রিপোর্ট দিচ্ছেন। পুরানো তথ্যে ভরা। নতুন অগ্রগতি কোথায়?' সেই সঙ্গেই বিচারপতির প্রশ্ন, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় একটু তাড়াহুড়ো হল তারপর আবার ঘুমিয়ে পড়লেন? এতবড় দুর্নীতি কারও একার মস্তিষ্কপ্রসূত হতে পারে না। মানিক ভট্টাচার্য তো একা এই দুর্নীতি করেননি। তিনি ছাড়াও আরও ব্যক্তি আছেন। কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন? বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া বাকিদের তালিকাই বা কোথায়?' কার্যত এই প্রশ্নগুলি তুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সির ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন রেখে দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বাংলার সাধারণ মানুষের মনেও একই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। বছরভর কেমন যেন ঝিমিয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ভোট এলেই আবার চাঙ্গা হয়ে উঠছে তারা। অন্যদিকে যোগ্যরা কবে চাকরি পাবেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তবে এর আগেও তদন্তে গতি আনার জন্য বারবার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর কয়েকদিন একটু গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে গোয়েন্দা সংস্থা। তারপর কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে যায়। এবার ফের একবার কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করলেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দুটি মামলা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সেই ২টি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে সরে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। তাঁর বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। কোনও বিচারপতি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকার দিলে তিনি সেই বিষয়ে বিচার করার অধিকার হারিয়ে ফেলেন, এই মর্মেই এই সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট।