ভগবান চিনতে না পারলে ঠাকুরঘরে যান! বিস্ফোরক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশন অর্থাৎ এসএসসি কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করছে বারবার।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
abhijit4

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: হাইকোর্টে এক রকম কথা বলার পর সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের অবস্থান বদলে ফেলছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাই দুই আদালতের মধ্যে বার বার নির্দেশের পার্থক্য দেখা দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এমনই অভিযোগ উঠল স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে। এমন শুনে কড়া মন্তব্য করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, 'যাঁরা ভগবানকে চিনতে পারছেন না, তাঁদের বলব ঠাকুরঘরে গিয়ে দেখুন। ভগবান চিনে যাবেন'। হাইকোর্টের বিচারপতি এবং আইনজীবীদের কাউকে 'বোকা' মনে করার কারণ নেই বলেও জানান।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই চাকরি হারানো ববিতা সরকারের দায়ের করা এক মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ৯০৭ জন শিক্ষকের নাম, রোল নম্বরসহ উত্তরপত্র প্রকাশের যে নির্দেশ দেন, ডিভিশন বেঞ্চে সেই নির্দেশ থাকলেও সুপ্রিম কোর্ট তাতে পরিবর্তন আনে। নাম, রোল নম্বর প্রকাশ করতে বললেও শীর্ষ আদালত উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশে এক সপ্তাহের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। সেটা অনুযায়ী উত্তরপত্র বাদে ৯০৭ শিক্ষকের নাম ও রোল নম্বরের তালিকা বুধবারই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। 

বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাটি উঠলে কেন উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হল সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বিচারপতিকে জানান যে কমিশন এই মামলায় হাইকোর্টে যে অবস্থান নিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তা পাল্টে ফেলেছে। কারচুপির কথা হাইকোর্টে স্বীকার করলেও শীর্ষ আদালতে স্বীকার করছে না। ফলে সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপত্র প্রকাশে স্থগিতাদেশ দেয়। এসএসসির অবস্থানের কারণেই হাইকোর্টের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে পাল্টে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য মামলাগুলিতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে।

এই অভিযোগ শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে বসে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির শুনানির রেকর্ড শুনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কেন কমিশন দুই আদালতে দু’রকম অবস্থান নিচ্ছে, তা জানতে চাইলেন। হাইকোর্টে সওয়াল চলাকালীন তারা যা বলেছে, তার নেপথ্যে অন্য কোনও চাপ রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন। নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে স্থগিত হয়ে গেছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার ক্ষেত্রে তো বেঞ্চও বদলে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে একাধিক মামলা সরিয়ে অন্য বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।