নিজস্ব সংবাদদাতা: দক্ষিণ লোনাক হ্রদের জলস্ফীতি এবং তিস্তার জল বেড়ে সিকিমের 'লাইফলাইন' ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। খরস্রোতা তিস্তার পাশেই কাজ করা হচ্ছে জাতীয় সড়ক মেরামতির। সরকারি স্তর থেকে পর্যটন মহলে প্রশ্ন এখন একটাই- পুজোর আগে কি খুলে যাবে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী এই রাস্তা? জানা যাচ্ছে যে শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক অবধি ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সারাই করে একমুখী বা 'ওয়ান ওয়ে' গাড়ি চলাচল পুজোর আগেই চালু যাতে করা যায় তার জন্য চেষ্টা চলছে।
তবে আবহাওয়া আর তিস্তার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেই বিষয়টি দিন দশেক পরে দেখা যাবে যে কোথায় দাঁড়ায়। জাতীয় সড়ক আগামী নভেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি চালু করা যাবে কি না, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। সিকিমের মুখ্যসচিব ভি বি পাঠক বলেন যে জাতীয় সড়কটিতে বিপর্যয় নেমে আসার ফলে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রংপো থেকে মেল্লি রাস্তা খুলে দেওয়া গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা বাজার থেকে গেলখোলা, রম্ভিখোলার অবস্থা খুব খারাপ। সেখানে এখন পুরোদমে কাজ চলছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে 'ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক' দিয়ে রাস্তা খোলা যায় কি না, সেটা নিয়ে ভাবনা চলছে।
সিকিমের অংশ সিকিম পূর্ত দফতর আর পশ্চিমবঙ্গের দিকে রাজ্য পূর্ত দফতর দেখভাল করে। সিকিমের চিন সীমান্তে সেনাবাহিনী এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে। পরে লাভা, গরুবাথানের নতুন রাস্তাটি তৈরি হওয়ায়, সেনাবাহিনী সেটা ব্যবহার করে থাকে। সাম্প্রতিক দুর্গোগের পর থেকে লাভার পথেই ভারী গাড়়ি, পণ্যবাহী গাড়ি, সেনার গাড়ি সিকিমে যাচ্ছে। এর বাইরে দার্জিলিং, সিংলা, জোরথাংয়ের রাস্তাও ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু দু'টি রাস্তাই অত্যন্ত ঘুরপথ হওয়ায় শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক পৌঁছতে সাত থেকে ন'ঘণ্টা সময় লাগার পাশাপাশি বাড়ছে পরিবহণ খরচ। পশ্চিমবঙ্গ সরকার জাতীয় সড়ক মেরামতের দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের অধীন 'ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার কর্পোরেশন লিমিটেড'কে। সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা কাজ করছেন। গত কয়েক দিন ধরে পুরোদমে জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ চলছে। বিআরওর সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। তিস্তা বাজার, গেলখোলা, রম্ভিখোলা, লিকুভিরের মতো বহু এলাকায় জাতীয় সড়কটি কার্যত তিস্তার কবলে। মাটি, বালি, নুড়ি-পাথর ফেলে রাস্তা উপরে তুলে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব।