নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন নয় যেন 'গণহত্যা' চলছে। এই আবহে শান্তির জন্য ডিজিপিকে নির্দেশ দেওয়া হোক। মামলার আবেদন দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। গতকাল সেই মামলার ক্ষেত্রে দ্রুত শুনানির আবেদন জানান মামলাকারী আইনজীবী। এতেই বিরক্ত হন কলকাতা হাইকোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। গতকাল প্রধান বিচারপতি এবং জাস্টিস অজয় কুমার গুপ্তর বেঞ্চের সামনে মামলাকারী আবেদন করেন যাতে দ্রুত তাঁর মামলার শুনানি করা হয়। এরপর জানা যায় যে মামলাটি বুধবারের জন্য তালিকাভুক্ত রয়েছে। তবে এর শুনানি হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। মামলাকারী আইনজীবী আবার আর্জি জানান যাতে বুধবারই দ্রুত শুনানি করা হয়। রেগে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'প্রতিদিন সকালে এই এক সমস্যা। বাইরে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁদের কী? আপনি একদিন এসে আমার আসনে বসে দেখবেন তো। গতকালকে আমি ৬৫টি মেনশনিং স্লিপ পেয়েছিলাম'।
মামলাকারী আইনজীবী বলেন যে তাঁরা নিরুপায় হয়ে গেছেন কারণ মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আপনারা নির্বাচনে লড়তে চান বলে মরছে। কর্মসংস্থানহীন হয়ে, খেতে না পেয়ে মরছে'। প্রধান বিচারপতি সরাসরি মামলাকারী আইনজীবীকে জানান যাতে প্রয়োজনে এই মামলা অন্য কোথাও নিয়ে যান তিনি। আইনজীবী এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তিনি বলেন যে প্রধান বিচারপতির ওপরই সব ছেড়ে দিলেন তিনি। আর বিরক্ত করা হবে না প্রধান বিচারপতিকে।
মামলাকারী আবেদন করেন যে হাইকোর্টের নির্দেশের পরও পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশ ঘিরে একের পর এক মৃত্যু হচ্ছে বাংলায়। উচ্চ আদালত যেন ডিজিপিকে শান্তি রক্ষার্থে নির্দেশ দেয়, সেই মর্মেই মামলা করা হয়। এই আবহে প্রধান বিচারপতি জানান, যদি এটা আদালত অবমাননার মামলা হয়, তাহলে দেখতে হবে মূল মামলাটি কোন বিচারপতি শোনেন। সেক্ষেত্রে সেই বিচারপতির এজলাসে কতটা চাপ রয়েছে সেটাও দেখার বিষয়। যদি এটা নতুন মামলা হয় তাহলে নোটিশ পাঠাতে হবে। এর আগে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল হাইকোর্টের সেই নির্দেশ বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টও। এদিকে ইতিমধ্যেই কমিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দু'টি অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়েছে।