নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলা ব্যান্ড ফসিলসের প্রাক্তন সদস্য এবং বিখ্যাত বেসিস্ট চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের আকস্মিক মৃত্যু শোকের ছায়া ফেলেছে বাংলা সঙ্গীত মহলে। রবিবার কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটের ভাড়া বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাত্র ৪৮ বছর বয়সেই জীবন থেকে বিদায় নিলেন চন্দ্রমৌলি।
চন্দ্রমৌলির ঝুলন্ত দেহ প্রথম দেখতে পান তাঁর বর্তমান ব্যান্ড সঙ্গী মহুল চক্রবর্তী। চন্দ্রমৌলির বাড়িতে এসে পরিস্থিতি দেখে তিনি সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানায় খবর দেন। কলকাতা পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। জানা গেছে, চন্দ্রমৌলির ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। নোটে লেখা রয়েছে, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।
১৯৭৬ সালে জন্ম নেওয়া চন্দ্রমৌলি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পেশা ছেড়ে সঙ্গীতকেই জীবনের লক্ষ্য করেছিলেন। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৮ বছর ফসিলস ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ফসিলসের ম্যানেজার এবং রূপম ইসলামের স্ত্রী রূপসা জানিয়েছেন, “কল্যাণীতে শো করতে যাওয়ার পথে আমরা এই খবর পেয়েছি। চন্দ্রমৌলি আমাদের সঙ্গে ১৫ বছর পারফর্ম করেছে। প্রত্যেক সদস্য বিধ্বস্ত। রূপম একেবারে ভেঙে পড়েছে।” ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ফসিলস ছাড়েন চন্দ্রমৌলি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাঁর জীবনে নানা সমস্যা চলছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানসিক অবসাদ ও আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন ছিলেন ডিপ্রেশনের জন্য। বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের দেওয়া তথ্যে এসব জানা গেছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সুইসাইড নোটের লেখার সঙ্গে চন্দ্রমৌলির পুরনো লেখার মিল খতিয়ে দেখছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। ব্যান্ডের প্রাক্তন সহকর্মীরা এই শোকে মূহ্যমান। রূপম ইসলাম সহ ফসিলসের অন্য সদস্যরা জানিয়েছেন, চন্দ্রমৌলি শুধু তাঁদের সহকর্মীই ছিলেন না, বরং ছিলেন পরিবারের মতো।
চন্দ্রমৌলির মৃত্যু বাংলা সঙ্গীত জগতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব নিয়েছেন সঙ্গীতপ্রেমীরা।