নিজস্ব সংবাদদাতা: গত বছর থেকে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় হয়ে রয়েছে রাজ্য। পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য রোজ সামনে আসছে। শিক্ষক কেলেঙ্কারির অভিযোগে বহুদিন জেলে রয়েছেন কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এবার এই কাকুর একাধিক ঠিকানায় একযোগ হানা দিল ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রহস্যভেদ করতে ফের সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কিছুদিন আগে কালীঘাটের কাকুর সূত্র ধরে উঠে এসেছিল তার মেয়ে-জামাইয়ের নাম। এবার কলকাতার লি রোডে কালীঘাটের কাকুর জামাইয়ের ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছে ইডি।
শুধু সেখানেই নয়, আজ নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ধৃত কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের একাধিক ঠিকানায় হানা দিয়েছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি পৌঁছে গিয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নিউ আলিপুর, জোকা এবং ঠাকুরপুকুরের ঠিকানাতেও। এদিন সকালেই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের নিউ আলিপুরের অফিসে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা হানা দেন। নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র কোথায় কোথায় সরিয়েছে তার তদন্ত করতেই তল্লাশি চালানো হয় বলে জানা গেছে। লিপস অ্যান্ড বাউন্ড কোম্পানিতে সিইও পদে আনা হয় কালীঘাটের কাকুকে। অন্যদিকে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। অভিষেকের পরিবারের সদস্যরা এই কোম্পানির কর্মকর্তা বলে জানা গেছে। সাত সকালে এই কোম্পানিতে হানা দিতেই শোরগোল রাজ্য জুড়ে। গতকালই আমেরিকায় ডাক্তার দেখিয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের মেয়েকে নিয়ে। তারপর কয়েক ঘন্টা না কাটতেই সোমবার সকালেই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের নিউ আলিপুরের অফিসে হানা দিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা।
গত ২০ মে সুজয়কৃষ্ণর বেহালার বাড়ি, অফিসসহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি যেখানে সুজয়কৃষ্ণর বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছিল। যা তাঁর আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন। রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করে বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলকে। তাঁর মুখেই প্রথম ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা শোনা গিয়েছিল। নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তে নাম এসেছে গোপাল দলপতির। তাঁর মুখেও ‘কাকু’র নাম শোনা যায়। এর পরেই গোয়েন্দাদের আতশকাচে আসেন সুজয়। তাঁর নাম সামনে আসার পরই সুজয়কৃষ্ণ দাবি করেন যে তিনি যেহেতু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে কাজ করেন সেই কারণেই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে৷