নিজস্ব প্রতিবেদন : ডুরান্ড কাপের ডার্বি ম্যাচ বাতিলের পর সল্টলেকে যুবভারতী স্টেডিয়ামের বাইরে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সমর্থকরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিলেন। মহমেডানের সমর্থকও তাঁদের সাথে যোগ দেন। সকলের মুখে ছিল 'দুই গ্যালারি এক স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর' স্লোগান। মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তাদের ক্ষোভ প্রকাশের এই উদ্যোগ সমাজে নিরাপত্তার দাবি এবং ন্যায়বিচারের প্রতি নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিল।
আর জি কর নারকীয় ঘটনার পর বিয়াল্লিশ দিন পেরিয়ে গেছে, কিন্তু কলকাতার নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের আগুন এখনও জ্বলছে। মশাল হাতে শহরের রাস্তায় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষ। বিশাল মিছিলে জনস্রোতের উপস্থিতি দেখার মতো ছিল, যা ২০১১ সালের পর থেকে ঘুমিয়ে পড়া নাগরিক আন্দোলনকে আবার চাঙ্গা করে তুলেছে। শুক্রবারের মশাল মিছিলে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহমেডান—ময়দানের তিন প্রধান ক্লাবের সমর্থকেরা একত্রিত হন। তারা 'তিলোত্তমার পাশে ময়দান' শীর্ষক একটি ব্যানার প্রদর্শন করেন, যা শহরের ঐতিহ্য এবং একতার প্রতীক। এই ব্যানারে তিনটি হাতের স্কেচ ছিল—একটি লাল-হলুদ, একটি সবুজ-মেরুন এবং তৃতীয়টি সাদা কালো—যা ক্লাবগুলোর পতাকার রং প্রকাশ করে।
জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্না শেষ হলেও তাদের আন্দোলন এখনও চলমান। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আর জি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে তাঁদের লড়াই থামবে না। শনিবার থেকে জরুরি বিভাগে যোগ দিতে প্রস্তুত হচ্ছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা, যা তাঁদের সংকল্পের চিত্র তুলে ধরে। এই প্রতিবাদগুলো শুধু একটি নির্দিষ্ট ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক সচেতনতার উদাহরণ, যেখানে নাগরিক সমাজ একত্রিত হয়ে ন্যায় ও নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছে। শুক্রবারের মিছিল ছিল সেই প্রবণতারই একটি নতুন অধ্যায়, যেখানে নানা পেশার মানুষ একসাথে এসে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন।
একদিকে স্বাস্থ্যভবন থেকে CGO পর্যন্ত জুনিয়র চিকিৎসকরা মিছিল করেন, স্লোগান দিয়ে CBI থেকে দ্রুত জবাব চান। অন্যদিকে, দক্ষিণ কলকাতার হাইল্যান্ড পার্ক থেকে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার মশাল হাতে মিছিল করে নাগরিক সমাজ, যেখানে রাজ্য প্রশাসন ও সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে চাপ তৈরি হয়। মিছিলে লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন ও সাদা-কালো পতাকা নিয়ে অংশ নেন ময়দানের তিন বড় ক্লাবের সদস্য ও সমর্থকরা।