নিজস্ব সংবাদদাতা: রেশন বন্টন দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্যে। রেশন কেলেঙ্কারির অভিযোগে সম্প্রতি ইডি গ্রেফতার করে নিয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুকে। জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারির পর থেকেই একাধিকবার সামনে উঠে আসে তাঁর কন্যা প্ৰিয়দর্শনীর প্রসঙ্গ। ইডি দাবি করছে যে যে সব সংস্থার মাধ্যমে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা হতো, সেই সংস্থায় যোগ ছিল প্ৰিয়দর্শনীরও। এই বিষয়ে জ্যোতিপ্রিয়র মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই তথ্য নাকি জানতে পেরেছে এই সংস্থা। ইডির জিজ্ঞাসাবাদে প্ৰিয়দর্শনী নাকি স্বীকার করে নিয়েছেন যে তিনি যখন ডক্টরেট করছিলেন, সেই সময় ওই সংস্থাগুলির তৈরি নথি তিনি দেখে নেন। ওদিকে এখানে বাবা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে তাঁর কথার কোনও মিল পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ ইডি জেরায় মন্ত্রী নাকি জানান যে ওইসব সংস্থার বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না।
রেশন দুর্নীতিতে গত অক্টোবর মাস থেকে কোমর বেঁধে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে ইডি। ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান ও জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারির পর তাদের সূত্র ধরে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। মন্ত্রীর পরিবারের লোকজন, আপ্ত সহায়ক, একাধিক জেলায় মিলের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে ইডি। ইডি দাবি করছে যে বাকিবুরের ঘনিষ্ঠ এক জেলার মিল মালিক তাদের কাছে বহু তথ্য ফাঁস করে ফেলেছেন। তার মাধ্যমেই গোয়েন্দারা জানতে পারে যে দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতে মোট তিনটি সংস্থা খুলে ফেলা হয়েছিল যেগুলোর ডিরেক্টর পদে বসিয়ে দেওয়া হয় মন্ত্রীর স্ত্রী-কন্যা ও বাড়ির পরিচারককেও।
এদিকে মন্ত্রীর প্রাক্তন পিএ অভিজিত্ দাস ইডির জেরায় দাবি করেন যে মন্ত্রীর কথা মত তার পরামর্শেই এই সমস্ত কাজ করেন তিনি। সাংবাদিকদের সামনেও সবকিছুর দায় তিনি জ্যোতিপ্ৰিয়র উপরেই চাপিয়ে দিয়েছিলেন। তবে আদালতে পাল্টা জ্যোতিপ্ৰিয় দাবি করেন যে এই সংস্থাগুলির সঙ্গে তার কোনও যোগই নাকি নেই। জ্যোতিপ্রিয় নাকি উল্টে আপ্ত সহায়কের উপর দোষ চাপিয়ে বলেন যে ওই সব কিছু অভিজিত্ সামলাত। তার মেয়ে ও স্ত্রীকেও নাকি জোর করে সেসবের ডিরেক্টর বানিয়ে দেন এই অভিজিত্ই। তবে মন্ত্রীর দাবির একেবারে পাল্টা দাবি করে বসলেন জ্যোতিপ্ৰিয় কন্যা। ইডি জেরায় তিনি বলেন যে ওই তিন সংস্থার নথি তিনি নিজেই নাকি দেখেছেন। এবার প্ৰিয়দর্শীনির এই স্বীকারোক্তির পর জ্যোতিপ্ৰিয়র অস্বস্তি আরও বেড়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে।