নিজস্ব সংবাদদাতা: কলকাতা হাইকোর্ট ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ইডিকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। আগামী বুধবারের মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সুজয়ের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদনও খারিজ করে দেন।
জানা গেছে যে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত সুজয়। চিকিৎসা করানোর জন্য বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার আবেদন করেন তিনি। কিন্তু ইডি তাঁর চিকিৎসা করাতে চায় এসএসকেএম হাসপাতালেই। মঙ্গলবার আদালত এই বিষয়ে ইডির আপত্তির কারণ জানতে চায় সোজা। বিচারপতি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে প্রশ্ন করেছিলেন যে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় অসুবিধা কোথায়? প্রত্যেকের হাসপাতাল নিয়ে নিজস্ব পছন্দ, অপছন্দ থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। এদিকে আবার বৃহস্পতিবার ‘কালীঘাটের কাকু’র জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। বিচারপতি ইডিকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে বলেন। আগামী বুধবার মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের আগে যদি সুজয়ের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা উঠে আসে, তবে এসএসকেএম হাসপাতালেই নিয়ে যেতে বলা হয় তাঁকে। এর আগে আবার সুজয়ের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন যে তাঁর মক্কেলের ধমনীতে তিনটি ‘ব্লকেজ’ ধরা পড়েছে। এই ক্ষেত্রে বাইপাস সার্জারি করাতে হতে পারে। সেই কারণেই কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চাইছিলেন সুজয়বাবু। কিন্তু ইডি জানিয়েছিল যে তারা এসএসকেএমেই সুজয়ের চিকিৎসা করানোর পক্ষপাতী। তাঁর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নথি দিল্লি এইমসে পাঠিয়ে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শও নিতে চায় কেন্দ্রীয় সংস্থা।
নিয়োগ মামলায় গত ৩০ মে গ্রেফতার করা হয় ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। এক কালে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের কর্মী সুজয়কে নিয়োগ মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূত্র বলে দাবি করেছে ইডি। সেই সুজয়কে গ্রেফতার করার পর সম্প্রতি তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু ‘ছুটি’ শেষ হতে জেলে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়। পিজি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় 'কালীঘাটের কাকু'কে। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন যে সুজয়ের হার্টে ব্লকেজ ধরা পড়েছে। এর পরই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য আবেদন করেন ‘কালীঘাটের কাকু’। এবার ইডিকে যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তার চিকিৎসায় কী ধরা পড়ে সেটাই দেখার।