নিজস্ব সংবাদদাতা: এ রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর আসছে মাঝে মাঝেই। মৃত্যুর খবর ভাবাচ্ছে। এবার প্রশ্ন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা কত? এই বিষয়ে এখনও কার্যত তথ্য দিচ্ছেন না স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। কারণ, তথ্য বেরোলেই নাকি হতে পারে সিআইডি তদন্ত। যদিও সরকারি থেকে বেসরকারি, সব হাসপাতালেই কমবেশি ডেঙ্গি রোগীতে শয্যা ভর্তি হয়ে রয়েছে।
সম্প্রতি সমস্ত জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। জানা গেছে যে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে গত বছরের মতো এ বারেও যদি সাপ্তাহিক ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সংবাদমাধ্যম জেনে যায়, তা হলে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কে বা কারা তথ্য ফাঁস করলেন, তা জানতে সিআইডিকে দিয়ে তদন্তও আবার করানো হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, মশাবাহিত রোগ নিয়ে এত রাখঢাক করা হচ্ছে কেন? আক্রান্ত বা মৃতের সংখ্যা গোপন করা হচ্ছে কেন? আর জনগণ যদি না-ই জানলেন বাস্তব পরিস্থিতির কথা, তা হলে তাঁরা সচেতন হবেন কী করে? লোকজন তো ভাবতেই পারেন যে ডেঙ্গি তেমন বাড়ছে না। জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের একাংশের মতে, তথ্য গোপন করে জনস্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করা হচ্ছে। ডেঙ্গি নিয়ে মানুষকে সচেতন করা হলেও সেটা বাড়ছে না কমছে, সেই তথ্য জানানো হচ্ছে না। এমনকি, কেউ যদি বলে ফেলেন, তা হলে তাঁদের পুলিশ-আইনের ভয় দেখানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ভবনের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের ঘরে ঢুকে গিয়েছে। বেসরকারি মতে, এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীর হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বাড়ছে। ডেঙ্গি থেকে সুস্থ হয়েও পুনরায় হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা দেখা গেলেও সেটা সংখ্যায় কম। যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের ডেঙ্গি থেকে সেরে ওঠার পরে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে বলছেন ডাক্তাররা। হৃৎপিণ্ড, বৃক্ক, পেট বা অগ্ন্যাশয়ের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। ডেঙ্গিতে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি, দুই প্রভাবই দেখা যায়। তাৎক্ষণিক প্রভাবে হৃদ্যন্ত্রে চাপ পড়ে মৃত্যু হয়ে যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদিতে অসম্ভব দুর্বলতা বোধ হবে এবং স্নায়ুর উপরে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। মানসিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে এই রোগীদের। এবার দেখা যাক তথ্য কবে আসে সামনে।