নিজস্ব সংবাদদাতা : শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হল ধর্মতলা। আর ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড হল যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু। একদিকে যেমন দূর পাল্লার বাস ছাড়ে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে অন্যদিকে, নিত্যযাত্রীদের রোজকার যাতায়াতের পথে লোকাল বাসও ছাড়ে। তবে, ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড নাকি ঠিকানা বদলাতে চলেছে। এমনই শোনা যাচ্ছে। যদিও তিলোত্তমা মহানগরীর দূষণের মাত্রা, ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধের বিপন্নতায় অনেক আগেই ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ডের জায়গা বদলের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এবার আরো একবার ধর্মতলা থেকে বাসস্ট্য়ান্ড সরে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল মেট্রোর কাজের জন্য। জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর নির্মাণকাজের জন্যে কমপক্ষে ২ বছরের জন্য অন্যত্র সরতে পারে ধর্মতলা বাসস্য়ান্ড। মেট্রোর পার্পেল লাইন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) -এর তরফে ইতিমধ্যেই বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকার এবং সেনাবাহিনীকে। তবে শুধু ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড নয়, প্রায় ৩০০ মিটার লম্বা এবং ১৫ মিটার চওড়া টানেলের জন্য সরতে পারে ধর্মতলার বিধান মার্কেটও। সেক্ষেত্রে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তাদের উপার্জনের জায়গা হল এই মার্কেট। নতুন কোন জায়গায় তাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে, সেখানে বেচা কেনা কেমন হবে এসব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তাদের মনে। তবে শোনা যাচ্ছে, কার্জন পার্কে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর যে বিল্ডিং নির্মাণ হচ্ছে, তার পিছন দিকে একটি মার্কেট তৈরি করে সেখানে পুনর্বাসন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের। এক কথায় বলা যেতে পারে, বিধান মার্কেট পুনঃরায় প্রতিস্থাপিত হবে কার্জন পার্ক এলাকায়। এদিকে বাসস্ট্যান্ডের ঠিকানা বদলে গেলে কোন ঠিকানায় গেলে মিলবে বাস সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। নতুন ঠিকানার বিষয়ে কিছু জানা না গেলেও ধর্মতলা থেকে বিভিন্ন জেলায় যে বাস পরিষেবা মিলতো সেই পরিষেবা প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। শিলিগুড়ি, বহরমপুর, দুর্গাপুর, আসানসোল, দিঘা এবং রাজ্যের আরও অনেক জায়গায় যাওয়ার সরকারি ও বেসরকারি বাস ছাড়ে এই ধর্মতলা থেকে। প্রচুর মানুষ রোজ যাতায়াত করেন। এমনকি দূরের অনেক ব্যবসায়ীও এই রুটে যাতায়াত করেন মালপত্র নিয়ে।
ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড চেনে না এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। ট্রাম লাইনের ধার দিয়ে শহিদ মিনারের সামনে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বাস। রোজকার যাতায়াত হোক কিংবা কয়েকদিনের ট্যুর, ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ডের বাসের ওপরেই ভরসা করেন অনেকে। সরকারি বাসের পরিষেবাও রয়েছে, লাক্সারি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাসের পরিষেবাও মেলে এই বাসস্ট্যান্ড থেকে। দূরের মানুষরা শহর কলকাতাকে ভালোভাবে না চিনলেও ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড তাদর নখদর্পণে। সেক্ষেত্রে বাসস্ট্যান্ডের জায়গা বদলে গেলে নতুন লোকেশন থেকে যাতায়াত করাটাও দূরের যাত্রীদের কাছে একটা অচেনা বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। তবে, ধর্মতলার কাছাকাছি যদি বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরিত হয় তাহলে চিন্তা কম। এখন দেখার ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড ধর্মতলা থেকে সরে কোথায় স্থানান্তরিত হয়।