নিজস্ব সংবাদদাতা : পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার রাজ্যের আর্জি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বহাল থাকল সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিল যে ২১ এপ্রিল সিঙ্গল বেঞ্চ যে নির্দেশ দেয় সেটাই কার্যকরী হবে।
রাজ্যের পুরসভাগুলিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। ইডির আবেদনের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরে মামলাটির ক্ষেত্রে পাল্টে যায় এজলাস। বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রাখে। সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার।
হাইকোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের এই ভূমিকায় হাইকোর্ট ক্ষুব্ধ হলে শীর্ষ আদালত থেকে স্পেশাল লিভ পিটিশন প্রত্যাহার করে নেয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। হাইকোর্টে রাজ্যের দাবি ছিল, পুরসভার মামলা শোনার এক্তিয়ার নেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। কিন্তু তিনি এই মামলা শুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন।
রায় ঘোষণায় ডিভিশন বেঞ্চ বলে যে রাজ্যের অধীনে পুরসভা এবং শিক্ষা দফতরে একই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২টি দুর্নীতি অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত রয়েছে। আবার জড়িত রয়েছেন একই ব্যক্তিরা। এই পরিমাণ দুর্নীতির জন্য মোহভঙ্গ হয়েছে আজকের তরুণ প্রজন্মের। তাই সিবিআই ছাড়া অন্য কোনও তদন্ত হবে না। সিঙ্গল বেঞ্চের রায় যথার্থ ছিল। অসৎ উপায়ে টাকা সংগ্রহের জন্য এই দুর্নীতি করা হয়েছে। জনসাধারণের উপর এর প্রভাব পড়েছে নেতিবাচকভাবে। ফলে এই মুহূর্তে আদালত কোনও হস্তক্ষেপ করবে না বলেই জানিয়ে দিল।
গত বুধবার পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৎপর হয়ে ওঠে সিবিআই। কলকাতা থেকে জেলাসহ মোট ১৪ জায়গায় হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সল্টলেকের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ছাড়াও গোয়েন্দারা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে দমদম, দক্ষিণ ও উত্তর দমদম পুরসভা, ব্যারাকপুর, পানিহাটি, কাঁচরাপাড়া, টিটাগড়, চুঁচুড়া, শান্তিপুর সহ বিভিন্ন পুরসভাতে তল্লাশি চালান। মামলায় ধৃত অয়ন শীলের চুঁচুড়ার ফ্ল্যাটেও হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। এই নিয়ে আবার রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন যে ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য দাবি করেন যে যে দুর্নীতি হয়েছে তাতে ফিরহাদ হাকিম নিজেও জড়িত।