নিজস্ব সংবাদদাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পর নানা তথ্য উঠে আসছে এক এক করে। এমনকী ক্যাম্পাসে মদ–গাঁজা খাওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। এবার তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল যাদবপুর থানার পুলিশ। অভিযোগ, গাঁজার চাষ রীতিমতো করা হতো মেইন হস্টেলের এ–২ ব্লকে। গ্রেফতার হওয়া পড়ুয়া ও প্রাক্তনীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইলে তেমনই ছবি পেয়েছে পুলিশ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের বারান্দায় টবের মধ্যে লাগানো গাঁজা গাছের ছবি এখন পুলিশের জিম্মায়। মাদক আইন অনুযায়ী, কোনও বাড়িতে গাঁজা গাছ লাগানো বা চাষ করা নিষিদ্ধ। তাহলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন হচ্ছে? সবটা খতিয়ে দেখবে এবার পুলিশ।
এদিকে লালবাজার জানায় যে উদ্ধার হওয়া ফোনগুলি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়। সেই রিপোর্ট হাতে এসেছে তদন্তকারীদের যেখানে দেখা গিয়েছে যে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনার পর পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা বহু ছবি মোবাইল থেকে ডিলিট করে দেয়। সন্দেহ হওয়ায় তা দেওয়া হয় ফরেনসিক ল্যাবে। সেই সব ছবি উদ্ধার করে ফেলেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। উদ্ধার হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে হস্টেলের বারান্দায় খুঁজে পাওয়া গেছে বেশ কিছু টব। তাতে গাঁজার চাষ করা হয়েছে। এই ছবি হাতে পেলেও তথ্য প্রমাণ লোপাট করে দিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। তাই তদন্তের স্বার্থে পুলিশ মেইন হস্টেলে গিয়েও কোনও গাঁজা গাছের সন্ধান পায়নি। কিন্তু মোবাইলের ডেটা রিকভারি করতেই গাঁজা চাষের হদিশ পেয়েছে পুলিশ।
বহিরাগতরাই ক্যাম্পাসে এসে গাঁজার আসর বসাত বলে অভিযোগ উঠল। তদন্তে নেমে তার প্রমাণও পাওয়া গেছে বলে জানায় পুলিশ। ইতিমধ্যেই মোট ১৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ফেলেছেন লালবাজারের অফিসাররা। ৭ জন মেসের কর্মী এবং ৭ জন পড়ুয়া। এই পড়ুয়াদের মধ্যে ৪ জন হস্টেলের আবাসিক। মেইন হস্টেলের এ–ওয়ান এবং এ–টু ব্লকের বারান্দায় এই গাঁজার টবগুলি রাখা ছিল। ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পর সরিয়ে দেন আবাসিকরা। কোথায় সরানো হয়েছে? তার সন্ধানে হস্টেলের ছাদ ও চিলেকোঠায় তল্লাশি করা হয়। তবে টবে গাঁজার কোনও সন্ধান মেলেনি। এদিকে তদন্তে উঠে এসেছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পরে কী বলা হবে সেটা নিয়েই দীর্ঘ আলোচনা করা হয়েছে ওই গ্রুপে। বেগতিক বুঝতে পেরে আচমকা ডিলিট করে দেওয়া হয় ওই গ্রুপ।