সৎ, নির্ভিক! বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশংসা করলেন ববিতা সরকার

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ববিতা সরকার এই দুটি নাম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় খুবই পরিচিত হয়ে উঠেছে। একজন প্রথম এই দুর্নীতিটি সবার সামনে এনেছিলেন আর ববিতা সরকার মন্ত্রীর মেয়ের চাকরি পেয়েছিলেন।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
babita

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার প্রথম রহস্য যিনি ভেদ করেছিলেন তিনি হলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই বিচারপতি যাকে চাকরি দেওয়া নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনিই আবার বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছেন পরবর্তীকালে। যদিও সেটা এই কারণে যে যাকে চাকরি দেওয়া হয় পরে তাকেই সেই চাকরি থেকে আবার বরখাস্ত করে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

ববিতা সরকার শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে। কিন্তু আবার সেই চাকরিই ছাড়তে হয়েছিল সেই বিচারপতির নির্দেশ মেনেই। বেতন বাবদ যে অর্থ তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার কাছ থেকে পান সেই টাকা ফেরত দিতে হয় তাঁকেও। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন। সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ভগবানের সঙ্গে তুলনা করলেন ববিতা সরকার। বলেন যে একবার যাঁকে ভগবানের আসনে বসানো হয় তাঁকে আর নামানো যায় না। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সৎ, নির্ভীক এবং নিরপেক্ষ বললেন ববিতা। সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলার সাহস রাখেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে কেউ প্রভাবিত করতে পারে না বলেই তাঁকে সম্মান করেন ববিতা। 

তবে তাঁর ক্ষোভ মূলত স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে। ববিতা সরকার বলেন যে যদি কিছু ভুল থাকে তবে তা কমিশনের ভুল। কমিশন পুরো প্যানেলটাকে দুর্নীতিতে ভরিয়ে দিয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের যে তালিকা বেরিয়েছে সেখানেও দেখা যাচ্ছে প্যানেলে নেই এই রকম অনেকেই ২০১৮ সাল থেকে চাকরি করছে। দাবি করেন, 'আমার ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে মানলাম। কিন্তু, প্যানেলে যাঁদের নামই নেই তাঁরা কী করে চাকরি করছেন?' বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর জায়গায় শিক্ষিকা হিসাবে হাই স্কুলে চাকরি গ্রহণ করেন ববিতা। এর আগে বেতন বাবদ যে অর্থ অঙ্কিতা পেয়েছিলেন তা ববিতাকে মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়ে দেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশে তিনি স্কুলে পড়ানোও শুরু করেন।

এরই মধ্যে অন্য একটি মামলায় সামনে আসে যে ববিতার নম্বর সম্বন্ধে সঠিক তথ্য দেয়নি স্কুল সার্ভিস কমিশন। প্রার্থী অনামিকা রায়ের থেকে দুই নম্বর কম পেয়েছেন ববিতা। সেই মামলায় ববিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বদলে শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায়কে চাকরি দিতে বলা হয়। ববিতার থেকে প্রাপ্ত অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন ববিতা।