নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রয়োজনে জেলের বাইরে দাঁতের চিকিৎসা করাতে পারবেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়ে দিল ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিশেষ PMLA আদালত। একই সঙ্গে অর্পিতার দাঁতের চিকিৎসা নিয়ে প্রেসিডেন্সি মহিলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করলেন বিচারক।
মঙ্গলবার নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির দায়ের করা মামলার শুনানি হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। শুনানিতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। শুনানি চলাকালীন বিচারক তাঁকে প্রশ্ন করেন, 'আপনার কি কিছু বলার আছে?' অর্পিতা মৃদু কণ্ঠে বলেন, 'আমার শরীর খারাপ। দাঁতে খুব ব্যথা। জেলে চিকিৎসা হচ্ছে কিন্তু পুরো সারছে না'। এটা শুনে অর্পিতার দাঁতে ব্যথা নিয়ে জেল কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেন বিচারক। তিনি নির্দেশ দেন যে দরকার হলে উনি জেলের বাইরে পছন্দের চিকিৎসকে দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেন। সেই জন্য সব আয়োজন করতে হবে জেল কর্তৃপক্ষকে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অয়ন শীল, মানিক ভট্টাচার্য, তাঁর ছেলে শৌভিকসহ প্রত্যেককে এদিন ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
২০২২ সালের ২৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী তথা অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। সেই রাতে তাঁর টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে তল্লাশিতে হানা দিয়ে উদ্ধার করা হয় টাকার পাহাড়। পরে কামারহাটিতে আরেকটি ফ্ল্যাটেও পাওয়া যায় বিপুল টাকা। সব মিলিয়ে উদ্ধার হওয়া নগদের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৫০ কোটি। সেই থেকে প্রেসিডেন্সি মহিলা সংশোধনাগারে বন্দি অবস্থায় রয়েছেন অর্পিতা। এর আগে পার্থ-অর্পিতাকে ঘিরে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ঠিক কী সম্পর্ক সেটা নিয়ে ও ছড়িয়েছে নানা জল্পনা। এর মধ্যেই দেখা যায় যে এলআইসি-র নথিতে উল্লেখ আছে যে তাঁদের সম্পর্ক আসলে কাকা এবং ভাইঝির। জানা যাচ্ছে, এলআইসি-র ৩১টি নথিতে অর্পিতা পার্থকে নমিনি করেছেন নিজের ‘আঙ্কল’ হিসেবে। ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে অর্পিতার নামে ৩১টি জীবনবিমার পলিসির নথির খুঁজে পায় ইডি আধিকারিকরা। ২০১২ সালের মার্চ মাসে মাত্র ৮ দিনের ব্যবধানে ৮১ লক্ষ টাকার বীমা করা হয় যেখানে দেখা যায় প্রায় সবকটিই ওয়ান টাইম প্রিমিয়াম। সেগুলো সব প্রিমিয়ামই মেটানো হয়েছিল নগদ টাকায়। দুজনকে সামনাসামনি বসিয়ে জেরায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় অর্পিতাকে নিয়ে বলেন, 'তেমন ভাবে চিনি না। তবে ক্লাবের পুজোতে বেশ কয়েকবার দেখেছি'।