দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : সামনেই দীপাবলি। চরম ব্যস্ততা কুমোর পাড়ায়। মাটির প্রদীপ তৈরিতে চরম তৎপরতা। কুমোরপাড়া বাসিন্দাদের দাবি, কমছে মাটির প্রদীপের চাহিদা। মেলেনি সরকারি সাহায্য। তাই এই কাজ থেকে মুখ ফেরাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। এতেই জমেছে ক্ষোভের পাহাড়।তবে কারও কারও দাবি বিগত বছরের তুলনায় এবছর কিছুটা হলেও চাহিদা বেড়েছে মাটির প্রদীপের।
টুনি লাইট সহ রংবেরঙের রঙিন আলোর দাপটে নিভতে বসেছে চন্দ্রকোনার কুমোরপাড়ার মাটির প্রদীপ। নতুন প্রজন্ম মুখ ফেরাচ্ছে মাটির প্রদীপের আলো থেকে। মন মজেছে এলইডি লাইটে।কালী পুজো আসলে এসময় নাওয়া খাওয়ার সময় ছিল না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার কুমোরপাড়ার কারিগরদের।একটা সময় ছিল যখন কালী পুজোর আগে মাটির প্রদীপ তৈরির কাজে চরম ব্যস্ততা ছিল কুমোরপাড়ার প্রতিটি বাড়িতেই। কিন্তু এখন সে সব অতীত, হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার এখন মাটির প্রদীপ তৈরির কাজে যুক্ত।কালী পুজোর আগে তারাই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কিছু রোজগারের আশায়।এ পেশা বন্ধ করে অনেকেই চাষবাস বা অন্য পেশায় যুক্ত হয়ে সংসার চালাচ্ছে।তেমনই একটি কুমোরপাড়ার করুণ ছবি উঠে এলো চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাই পৌর এলাকায় ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কুমোরপাড়ায় এবং চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাচকা গ্রামে। এই দুই এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার বংশপরম্পরায় বরাবরই মাটির তৈরি নানান জিনিস তৈরি করে সংসার চালাত।
বিগত কয়েকবছর ধরে ধুঁকছে এই গ্রাম গুলির মাটির কাজের সাথে যুক্ত কারিগরেরা।তাদের দাবি বেশ কয়েক বছর আগে মাটির প্রদীপের চাহিদা ছিল, কিন্তু কয়েক বছর ধরে মাটির প্রদীপের চাহিদা একে বারে তলানিতে।বর্তমানে এই বছর কিছুটা হলেও চাহিদা বেড়েছে,কিন্তু কখনো মেলেনি কোন সরকারি সাহায্য ও স্বীকৃতি,অপর দিকে নতুন প্রজন্ম মুখ ফেরানোয় হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে এই ব্যাবসা এমনি বলছেন এই পরিবারগুলি।
কেন চাহিদা কমছে মাটির প্রদীপের? জানা যায়, বাজার ছেয়ে গিয়েছে টুনি লাইট,রঙবেরঙের এলইডি আলো সহ ছাঁচের ডিজাইনার মোমবাতিতে, সাথে রয়েছে আতসবাজির দাপট।ফলে ধীরে ধীরে বাজারে চাহিদা কমতে শুরু করে মাটির প্রদীপের,এই মাটির প্রদীপই একটা সময় কালী পুজোর আগে গ্রামবাংলার ঘর আলো করে রাখতো।ডিজিটালের যুগে সেসব বন্ধের মুখে,ফলে রুজিরোজগারে টান পড়েছে এইসকল কারিগরদের। সকলেই চাইছে দ্রুত সরকারি সাহায্য ও এই শিল্পকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হোক।