নিজস্ব সংবাদদাতা : আগামীকাল রথযাত্রা। এই উৎসবকে ঘিরে সাজো সাজো রব। পুরীতে যেমন ভক্তদের ঢল নেমেছে অন্যদিকে তেমন, ইস্কন ও মাহেশের মন্দিরেও চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। হিন্দুরা মনে করে, রথের রশ্মিতে টান দিলে পুণ্যার্জন হয়। রথযাত্রায় রথে চড়ে মাসির বাড়িতে যাত্রা করেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা-তিন ভাই বোন। এক সপ্তাহ পর ফের মাসির বাড়ি থেকে ফিরে আসেন তারা। সেই সময় পালিত হয় উল্টো রথ।
রথযাত্রাকে ঘিরে পুরীতে মহোৎসবের শুরু। রথের রশ্মিতে টান দেওয়ার আগে সোমবারই রেকর্ড সংখ্যক ভক্তদের ভিড় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। রথের আগের দিন রাজবেশে সাজিয়ে তোলা হয় জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রাকে। বিশেষ সেই রূপের দর্শন করতে সোমবার সকাল থেকেই হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড় পুরীতে। জগন্নাথ দর্শনের জন্য টিকিট কেটে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেল তাদের। এক ঘন্টায় বিক্রি হয়েছে ৭ লক্ষ টাকার টিকিট।
প্রসঙ্গত, ১৪ দিনের নিভৃতবাস কাটিয়ে রথযাত্রার আগে রাজবেশ ধারণ করেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। এদিন সকাল থেকে ভক্তদের জন্য তিন দেব দেবীর সেই রূপ দর্শনের ব্যবস্থা করা হয় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের তরফে। ভোরবেলায় যে পুজো হয়, সেখানে তিন দেবতার বিগ্রহে চক্ষুদান করেছেন সেবায়েতরা। পালিত হয়েছে বানাকা লাগি আচার-অনুষ্ঠানও। শৃঙ্গার হয়েছে বিগ্রহের।নবযৌবন বেশে সেজে উঠেছেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলে পরমানিক দর্শন। মাত্র ৬০ মিনিটে প্রায় সাত হাজার ভক্ত ভিড় জমিয়েছিলেন শ্রী মন্দির চত্বরে। ১০০ টাকা করে টিকিট কেটে ঠাকুর দর্শন করেন তারা। তবে, বিশেষ ভক্তদের জন্যই এই ব্যবস্থা করেছিল মন্দির কমিটি। এক ঘন্টায় বিক্রি হয়েছে ৭ লক্ষ টাকার টিকিট।
পরের পর্বে সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত সহনমেলা দর্শনের আয়োজন করা হয়। এই পর্বে বিনামূল্যেই শ্রী মন্দিরে প্রবেশ করার সুযোগ পান জগন্নাথদেবের ভক্তরা। দর্শন শেষে উত্তরের দ্বার দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর বন্ধ করে দেওয়া হয় শ্রী মন্দিরের গর্ভগৃহ। রথযাত্রা পর্যন্ত আর দেখা হবে না জগন্নাথদেবের সঙ্গে। রথ বেরনোর আগে সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাজবংশর সদস্য রাস্তা পরিষ্কার করে গুন্ডিচ মন্দিরের উদ্দেশ্যে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার যাত্রার শুভ সূচনা ঘটাবেন। রথের রশ্মিতে টান পড়লেই শুরু হবে রথযাত্রা। সপ্তাহ খানেক গুন্ডিচ মন্দির তথা মাসির বাড়িতে কাটিয়ে পুনঃরায় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে আসবেন তিন দেব-দেবী। তবে শুধু পুরী নয়, রথযাত্রাকে ঘিরে উন্মাদনা দেশ থেকে রাজ্য সর্বত্রই।