নিজস্ব সংবাদদাতা: বিশ্বজুড়ে আবারও ভাইরাস আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। ২০২৫ সাল শুরু হতে না হতেই করোনার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে নতুন এক ভাইরাস—এইচএমপিভি (Human Metapneumovirus)। সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল আবারও চিন। করোনার মতোই এই ভাইরাসও তীব্র সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, যার ফলে চিনের হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চিনের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের এতটাই ভিড় যে, রোগীদের পরিচর্যার জন্য করিডোরে বিছানা পেতে রাখতে হয়েছে। শ্মশানগুলোও প্রস্তুত করা হচ্ছে, কারণ চাপ ক্রমশ বাড়ছে। সাধারণ মানুষদের ফের মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে, যা নতুন ভাইরাস আতঙ্কের গভীরতা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।
চিন সরকার যদিও দাবি করছে, শীতকালে এমন সংক্রমণ স্বাভাবিক এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি তুলে ধরছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এইচএমপিভি-র সঙ্গে করোনা ভাইরাসের বেশ কিছু মিল রয়েছে। এই ভাইরাসেও প্রাথমিক উপসর্গ হলো সর্দি, কাশি ও জ্বর। সংক্রমণ প্রধানত বাতাসের মাধ্যমে, বিশেষ করে কাশি ও হাঁচির মাধ্যমে ছড়ায়। শিশুরা এবং প্রবীণ ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। চিনের পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে ভারতও সতর্ক হয়েছে। বিমানবন্দরগুলিতে যাত্রীদের স্ক্রিনিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য দপ্তর জনসাধারণকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এখনও এই ভাইরাস সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক সতর্কতা জারি করেনি, তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এইচএমপিভি সংক্রমণে প্রাথমিক সতর্কতাই হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, মাস্ক পরা এবং জনবহুল স্থানে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। শিশুরা এবং প্রবীণ ব্যক্তিরা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকায় তাদের বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। করোনার মতোই এই ভাইরাসকেও শুরুর দিকে হালকা ভাবে নেওয়ার মানসিকতা পরিণতি ভয়াবহ করে তুলতে পারে। তাই বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রস্তুতি ও সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।
এই ভাইরাস কতটা ভয়ঙ্কর এবং এটি করোনা ভাইরাসের মতো মহামারির রূপ নিতে পারে কিনা, তা সময়ই বলবে। তবে একথা নিশ্চিত যে, বিশ্ব আবারও এক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।