নিজস্ব সংবাদদাতা: হঠাৎ করেই পেরুতে জেগে উঠেছে উবিনাস আগ্নেয়গিরি। যার ফলে আগ্নেয়গিরি সংলগ্ন এলাকা ধোঁয়া এবং ছাইয়ে ঢেকে গিয়েছে। যে কারণে গত বুধবার উবিনাস আগ্নেয়গিরির আশেপাশের এলাকায় ৬০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। পেরুর রাজধানী লিমা থেকে প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার (৭৪৬ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে মোকেগুয়া অঞ্চলে অবস্থিত উবিনাস আগ্নেয়গিরি।
পেরুর জিওফিজিক্যাল ইনস্টিটিউট (Geophysical Institute of Peru) জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরিটি এই সপ্তাহের শুরু থেকে ছাই এবং গ্যাস ছড়াচ্ছে,যা বায়ুমণ্ডলে ৫,৫০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, আগ্নেয়গিরি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের শহরগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে ছাই ও গ্যাস। এলাকা গুলি ধোঁয়ায় ভোরে গিয়েছে।
পেরুর প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ওতারোলা এই পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রী পরিষদদের সঙ্গে একটি জরুরী বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পর দুই মাসের জন্য জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেন তিনি। পেরুর মন্ত্রী পরিষদ টুইটারে জানিয়েছে যে, আগ্নেয়গিরিতে বিস্ফোরণের ফলেই আশেপাশের এলাকায় ধোঁয়ায় ছেয়ে গিয়েছে। পেরুর মন্ত্রী পরিষদ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে যে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ছাই ও ধোঁয়া থেকে বাঁচতে সরকারের তরফে কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। উবিনাস আগ্নেয়গিরির আশেপাশের এলাকায় যে পরিমাণ ছাই ছড়িয়ে পড়েছে, তার জেরে মানুষের শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। তার জন্য এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই পরামর্শ আগামী ২ মাস কার্যকর থাকবে। আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি যে গ্রামগুলি আছে, সেখানকার রাস্তা পুরু ছাইয়ের স্তরে ঢেকে গিয়েছে।
গত মঙ্গলবার, দক্ষিণ আন্দিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত উবিনাস আগ্নেয়গিরি থেকে ছাই নির্গত হয়ে আশেপাশের গ্রামগুলিকে প্রায় ঢেকে দিয়েছে। এই আগ্নেয়গিরিটি ২০১৯ সাল থেকে নিষ্ক্রিয় ছিল। বিস্ফোরণের ফলে আগ্নেয়গিরি থেকে প্রায় ৫০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত ছাইয়ের স্তর দেখা গিয়েছিল। বায়ুমণ্ডলে মিশে সেই ছাই এবার শহরের দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৯ সালে ওই আগ্নেয়গিরি থেকে এত ছাই বেরিয়েছিল যে, তা বলিভিয়াতেও পৌঁছে গিয়েছিল।
পেরুর দক্ষিণে অবস্থিত ৭টি আগ্নেয়গিরির মধ্যে একটি হল উবিনাস আগ্নেয়গিরি। এটি একটি আগ্নেয়গিরি অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত যা দক্ষিণ পেরু থেকে উত্তর চিলি পর্যন্ত বিস্তৃত। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাটি "রিং অফ ফায়ার"-এর মধ্যে অবস্থিত। আগ্নেয়গিরি থাকার জন্য ওই এলাকায় মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্প হয় বলে জানা গিয়েছে।