প্রধানমন্ত্রীকে অপমান! ক্রমেই জোড়াল হচ্ছে প্রেসিডেন্টের ইস্তফার দাবি

মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী ভারত ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তি কর মন্তব্য করেন। তারপর থেকেই ভারত ও মালদ্বীপের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে বিরোধীরা ইস্তাফা দেওয়ার জন্য চাপ বাড়াতে শুরু করেছেন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
maldives president edit.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা: লাক্ষাদ্বীপের পর্যটনের প্রচার করেছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপরেই ক্ষেপে আগুন হয়ে যায় মালদ্বীপের শাসকদলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীরা। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তারপরেও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট দেশের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ভারত সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করার জন্য কোনও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এরপর থেকেই দেশের অভ্যন্তরে প্রবল চাপের মুখে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মইজ্জু। বিরোধীরা প্রেসিডেন্ট ও সরকারের ইস্তফার দাবি করেছেন। বিরোধীরা জানিয়েছেন, সরকারের এই ধরনের মন্তব্যের জেরে দেশের পর্যটন ব্যবসা মার খাবে। তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনারও হুমকি দিয়েছেন। 

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন। তিনি দেশবাসীকে লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণের জন্য় আহ্বান জানান। এরপরেই মালদ্বীপের শাসক দলের একের পর এক নেতা ও মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। পাশাপাশি ভারতীয়দের নিয়েও খারাপ মন্তব্য করেন। যার জেরে ভারতীয়রাও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। ভারতীয়দের একাংশ মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এরপরেই ভারতীয় ভ্রমণ পিপাসুদের একাংশ নিজেদের মালদ্বীপ সফর বয়কট করেছেন। আর তাতেই মালদ্বীপের পর্যটন শিল্প বিপাকে পড়ে। মালদ্বীপের পর্যটকদের একটা বড় অংশ ভারতীয়। কিন্তু ভারত মালদ্বীপে বয়কটের ডাক দেয়। তারফল হাতে নাতে পেতে শুরু করে মালদ্বীপ। একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০২৩ সালে দুই লক্ষ ভারতীয় পর্যটক মালদ্বীপে গিয়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মইজ্জু চিনের কাছে বেশি করে পর্যটক পাঠানোর আহ্বান জানান। 

মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির জন্য প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মইজ্জুকে দোষারোপ করেন। মালদ্বীপের অন্য় এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদও বর্তমান প্রেসিডেন্টকে দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী করেন। তিনি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করে নেওয়ারও দাবি জানান। বিরোধী নেতা আলি আজিমও ভারতকে অপমান বন্ধ করার জন্য দেশের নেতা ও মন্ত্রীদের ডাক দেন। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠেছে। মালদ্বীপের বিমানের টিকিট ও হোটেল ভাড়া ইতিমধ্যে বাতিল হতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, ভারতীয় সেলিব্রেটিদের একাংশ লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণ করার জন্য প্রচার শুরু করেছেন। যার ফলে অনেকটাই ব্যাকফুটে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। চলতি মাসেই মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের চিন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে। তার ঠিক আগেই ঘরে বাইরে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মালদ্বীপের পর্যটন বিভাগ নিয়ে যে মহম্মদ মইজ্জুর আলোচনা হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।