নিজস্ব সংবাদদাতা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেভাবে ভোটদানের প্রক্রিয়া চলে, তাতে কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে যা ভোটদাতাদের স্বাধীনতা দেয়। সাধারণভাবে, মার্কিন নির্বাচনে প্রার্থীরা দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের— রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট— মধ্যে থেকে নির্বাচিত হন। তবে, যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি বিশেষ বিধান রয়েছে, যার মাধ্যমে ভোটদাতারা নির্বাচনে কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীর নামের পরিবর্তে তাদের পছন্দমতো কোনো নাম ভোটদানে রাখতে পারেন। এটি "write-in vote" হিসেবে পরিচিত।
এই প্রক্রিয়ার মধ্যে, যদি একজন ভোটদাতা কোনো নির্বাচিত প্রার্থীকে সমর্থন না করে, তবে তিনি তার ভোটের ব্যালটে অন্য কোনো প্রার্থীর নাম লিখে দিতে পারেন। এটি সাধারণত তখন হয় যখন ভোটদাতা প্রার্থীদের মধ্যে কোনো একজনকে পছন্দ করেন না অথবা তার মনে কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীর জন্য ইচ্ছা থাকে, যিনি নির্বাচনে দাঁড়াননি। "Write-in vote" ভোটদাতার একটি স্বাধীন মতামত প্রকাশের একটি মাধ্যম।
এখন, মার্কিন নির্বাচনে এই "write-in vote"-এর মাধ্যমে একটি বিরল ঘটনা ঘটেছে, যা সম্প্রতি খবরের শিরোনাম হয়েছে। এক বাংলাদেশী ভোটদাতা মার্কিন নির্বাচনে যেহেতু ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের পরিবর্তে ভোট দিতে চেয়েছিলেন, তিনি তার ব্যালটে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম লিখে দিয়েছেন।
এটি একদিকে যেমন নজিরবিহীন, তেমনি বেশ চমকপ্রদ। কারণ, শেখ হাসিনা কোনোভাবেই মার্কিন নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন না, এবং তার নাম লিখে ভোট দেওয়া এমনকি ভোটের প্রথা ও রীতির প্রতি এক ধরনের অদ্ভুত রুচি প্রদর্শন করেছে। তবে, "write-in vote" নিয়মের আওতায়, এই ভোটটি বৈধ ছিল।
মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে এরকম "write-in vote" একটি বিরল ঘটনা হলেও, এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অনেকগুলো প্রশ্নও উত্থাপন করেছে। প্রথমত, কেন একজন বাংলাদেশী নাগরিক মার্কিন নির্বাচনে একটি বিদেশি নেতার নাম লিখে ভোট দিলেন? দ্বিতীয়ত, কি এমন কারণে তিনি মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চাইলেন বা এই ধরনের ভোটের মাধ্যমে তিনি কী বার্তা দিতে চেয়েছিলেন? এমন ঘটনা মার্কিন নির্বাচনের নিয়ম-কানুনের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এতে "write-in vote" ব্যবহারের সীমা ও উদ্দেশ্য নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হতে পারে। তবে, আইনগতভাবে এই ভোটটিকে অবৈধ বা বাতিল করা যাবে না, কারণ এটি সঠিকভাবে ভোটদাতার স্বাধীন ইচ্ছার প্রতিফলন।