নিজস্ব সংবাদদাতা: ভোটমুখি বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয় উঠেছে মূল্যবৃদ্ধি। এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে এই দেশে। তার ওপরে আমদানি নির্ভর বাংলাদেশে মাঝে মাঝেই সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যায় দাম। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল চিনি। প্রতিবেশী দেশটিতে এক লাফে ব্যাপক বেড়ে গেল চিনির মূল্য।
এমনিতেই বাংলাদেশে চিনির দাম ভারতের দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। বাংলাদেশে এক কেজি চিনি বিক্রি আগে হচ্ছিল প্রায় ১৩০ বাংলাদেশি টাকা দরে। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম প্রায় ৯৮ টাকা। সেখানে ভারতে চিনির দাম এখন ৪০ টাকা। বাংলাদেশের চিনির প্রায় পুরোটাই আসে আমদানির মাধ্যমে। ব্রাজিল থেকে অপরিশোধিত চিনি সেই দেশে এসে সেই চিনি শোধন করে বাজারে বিক্রি করে থাকে বেশ কয়েকটি সংস্থা। ডলারের নিরিখে বাংলাদেশের টাকার দাম হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় তারা চিনি আমদানি বন্ধ করে দেয়। আমদানিকারী সংস্থাগুলি দাবি করছে যে যে মূল্যে ব্রাজিলে অপরিশোধিত চিনি কেনা হচ্ছে তা বাংলাদেশে পৌঁছতে পৌঁছতে বাংলাদেশি টাকার দাম আরও পড়ে যাচ্ছে। আর এর ফলে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। ফলে আপাতত চিনি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। এর ফলে বাংলাদেশের বাজারে চিনির অপ্রতুলতা তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে।
খুচরো ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন যে সোমবার সেই দেশে চিনি মিল থেকে ১৩৭ বাংলাদেশি টাকা দরে চিনি কিনতে হয়েছে তাঁদের। সেটা আবার ১৪০ টাকা দরে খুচরো বিক্রি করছেন। খুচরো ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলছে যে বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে চিনির চোরাকারবার রুখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই কারণে বৈধ উপায়ে যারা চিনির কারবার করছেন তাঁরা পেছনে পিছিয়ে যাচ্ছেন। চিনির চোরাকারবার বন্ধ করতে মাস কয়েক আগে সেই দেশে কিছু প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার পর আর তেমন তৎপরতা দেখা গেল না। খুচরো ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলাদেশ সরকার দেশে চিনির সর্বোচ্চ দাম ১৩০ বাংলাদেশি টাকা প্রতি কেজি করে দিয়েছে। অবিলম্বে তা ১৪৫ বাংলাদেশি টাকা না করলে চিনি বিক্রি বন্ধ করতে হবে তাঁদের। তবে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে আদা, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা, আলু, ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। গত বখরি ইদের সময় সেই দেশে কাঁচা লঙ্কার দাম কেজি প্রতি ১২০০ টাকা হয়। ভারত থেকে লঙ্কা আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দিতে বাধ্য হয় হাসিনা সরকার।