নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৭ বছরের কিশোরের মৃত্যুর পর থেকে উত্তাল হয়েছে ফ্রান্স। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব রকমের চেষ্টা করছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। পঞ্চম দিনে পড়েছে ফ্রান্সের বিক্ষোভ। কিছু স্থানে এই বিক্ষোভ দাঙ্গার চেহারা নিয়েছে।
গত শুক্র ও শনিবার দাঙ্গা এবং লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য রাতারাতি ১,৩১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের শহর নান্তেরেতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করার জন্য পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ১৭ বছরের নাহেলের। সেখান থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত।
বড় বড় শহর গুলিতে ব্যাপক ভাঙচুর শুরু হয়েছে। প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেন্ডা ডার্মানি জানান, দাঙ্গাকারীদের দমাতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দাঙ্গার ফলে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লিওন, গ্রীনবল এবং মার্সাই শহরের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে, এই শহরগুলিতে দ্রুততার সঙ্গে দাঙ্গা দমন করে পুনরুদ্ধার করা হবে।
আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত কিশোর মৃত্যুর ফলে ফ্রান্সে পুনরায় তীব্র জাতিগত উত্তেজনা এবং দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘুদের ওপর পুলিশের অত্যাচার আবার নতুন করে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর উপরও তদন্ত শুরু হয়েছে। দেশের এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জার্মানি সফর স্থগিত করেছেন। তিনি জার্মান প্রেসিডেন্টকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
পুলিশের গুলিতে নিহত ১৭ বছরের কিশোরের আন্তোষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয় প্যারিসের শহরতলী নান্তেরেতে যেখানে সে থাকত। এই আন্তোষ্টিক্রিয়া উপলক্ষে বিশাল জনসমাগম হয়েছিল।
ফ্রান্সের জাতীয় ফুটবল দলের অনেক শীর্ষ খেলোয়াড় এই সংঘর্ষ বন্ধের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। দাঙ্গার ফলে রাত ৯টার পর থেকে ফ্রান্সে বাস এবং ট্রাম চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সব ধরণের আতশবাজি এবং দাহ্য পদার্থ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মার্সাই শহরের কর্তৃপক্ষ ৬টার পর মেট্রো সহ শহরের সমস্ত পরিবহনকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে এবং রবিবার পর্যন্ত সমস্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশের রাষ্ট্রপতি অভিভাবকদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যে, অপ্রাপ্তবয়স্ক দাঙ্গাবাজদের দায়িত্ব নিতে। কারণ তারা তরুণ এবং অল্পবয়সী।