নিজস্ব সংবাদদাতা: পাকিস্তানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা। সম্পূর্ণ একটি ট্রেন ছিনতাই করল বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA)। মঙ্গলবার গভীর রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বালোচিস্তানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ট্রেন থামিয়ে দেয় জঙ্গিরা। এরপর ট্রেনে থাকা ৪৫০ জন যাত্রীকে বন্দি বানানো হয়।
রাতভর অভিযানের পর পাক নিরাপত্তা বাহিনী এখনও পর্যন্ত ১৫০ জনকে উদ্ধার করেছে। সংঘর্ষে ২৫ জন বালোচ জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে। যদিও এখনও বহু যাত্রী ট্রেনের ভিতরে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যাত্রীদের অভিজ্ঞতা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো। কেউ ভাইকে, কেউ স্ত্রীকে পাশে বসিয়ে ফিরছিলেন, হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ট্রেনের কামরায়। একে একে উঠে আসে বন্দুকধারীরা, শুরু হয় এলোপাথাড়ি গুলি।
জাফর এক্সপ্রেসের যাত্রী মহম্মদ বিলাল সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানান, তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, "কীভাবে পালিয়ে এলাম, ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। এখনও আতঙ্কে রয়েছি।" যাত্রীদের বর্ণনা অনুযায়ী, জঙ্গিরা ট্রেনের ভিতরে ঢুকে সবার পরিচয়পত্র পরীক্ষা করছিল। যাঁরা পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশের বাসিন্দা, বিশেষ করে পাঞ্জাবের, তাঁদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছিল।
এক যাত্রী বলেন, "ওরা এসে আইডি কার্ড চেক করছিল। আমার চোখের সামনে দু'জন সেনাকে গুলি করে মেরে ফেলা হলো। বাকিদের কোথায় নিয়ে গেল, জানি না। আমি কোনওমতে ট্রেন থেকে নেমে চার ঘণ্টা হেঁটে স্টেশনে পৌঁছেছি।"
/anm-bengali/media/media_files/2025/03/11/nshZMrxi0L5n4ByH94Bm.jpeg)
অন্য এক যাত্রী, আল্লাদিত্তা জানান, "বিস্ফোরণের পরপরই ট্রেনে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। আতঙ্কে সবাই সিটের নিচে লুকিয়ে পড়েছিল। তারা পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা করে দিয়েছিল। আমি হৃদরোগী, তাই আমায় ও আমার পরিবারকে ছেড়ে দেয়।"
প্রায় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পাক বাহিনী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ১৫০ জনকে উদ্ধার করা গেলেও, বাকিদের কী অবস্থা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুরো ঘটনার জেরে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশজুড়ে।