নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও, কানাডায় খলিস্তানি চরমপন্থীদের কার্যকলাপ থামেনি—বরং আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা। সম্প্রতি ভ্যাঙ্কুভারে একটি ঐতিহাসিক গুরুদ্বারে ভারত-বিরোধী স্লোগান লিখে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনার পেছনে খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ।
ঘটনাটি ঘটেছে খালসা দিওয়ান সোসাইটির গুরুদ্বারে, যা রস স্ট্রিট গুরুদ্বার নামেও পরিচিত। গুরুদ্বারের এক মুখপাত্র জানান, ‘‘একদল বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ আমাদের পবিত্র গুরুদ্বারের দেওয়াল বিকৃত করেছে, সেখানে খলিস্তানপন্থী স্লোগান লিখে গিয়েছে। খালসা সাজনা দিবস উপলক্ষে আমরা যেখানে ঐক্যের বার্তা দিতে চেয়েছিলাম, সেখানে এই ধরনের উসকানিমূলক কাজ অত্যন্ত নিন্দনীয়। চরমপন্থীরা শিখদের মধ্যে বিভক্তি তৈরির চেষ্টা করছে এবং আমাদের সমাজে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের গুরুজনেরা বৈচিত্র্য ও স্বাধীনতার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ তাঁদের সেই আত্মত্যাগকেই অসম্মান করছে এই চরমপন্থীরা। আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের ঐক্য বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’’
এই গুরুদ্বারটি ১৯০৬ সালে নির্মিত হয় এবং এটি স্থানীয় শিখ সম্প্রদায়ের কাছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। রবিবার গুরুদ্বারে নগরকীর্তন ও বৈশাখী কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে খলিস্তানপন্থীদের অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এই ঘটনার পর শুধু গুরুদ্বার নয়, ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারে অঞ্চলের একাধিক হিন্দু মন্দিরেও খলিস্তানপন্থীরা হামলা চালিয়েছে এবং স্লোগান লিখে গিয়েছে।
/anm-bengali/media/media_files/2025/04/21/a5WyzDBvXiPEXcq7rqZy.JPG)
লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দিরের মুখপাত্র পুরুষোত্তম গোয়াল বলেন, ‘‘আমরা হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে সবসময় কাজ করে এসেছি। আর সেই কারণেই আমাদের মন্দিরকেও টার্গেট করা হয়েছে। এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। কিছু চরমপন্থী আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে।’’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও কানাডার একাধিক হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছিল। সেই সময় রস স্ট্রিট গুরুদ্বারে হিন্দু-শিখ সম্প্রদায়ের প্রায় ৬০ জন সদস্য একত্রিত হয়ে ঘোষণা করেছিলেন, “চরমপন্থীদের এই ষড়যন্ত্র বানচাল করা হবে।” তবুও এখনও পর্যন্ত পুলিশ এই ঘটনায় কোনও দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এই ঘটনার জেরে কানাডায় বসবাসকারী শান্তিপ্রিয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। প্রশাসনের তরফে দ্রুত পদক্ষেপ না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা।