জনশূন্য বেথলেহেমের চার্চ! নেই ঐতিহ্যবাহী ক্রিসমাস ট্রি

বেথলেহেমের ঐতিহ্যবাহী চার্চ জনমানব শূন্য। নেই বেথলেহেমের ঐতিহ্যবাহী ক্রিসমাস ট্রি। ইজরায়েলের হামলায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত বেথলেহেম। নেই কোনও বিদেশি পর্যটকও। স্থানীয় নেতারা বড়দিনের অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
chistmas.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা:  বেথলেহেম। এখানের এক আস্তাবলের কাছে যিশু খ্রিস্টের  জন্ম হয়েছিল। ক্রিসমাস যত এগিয়ে আসে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের কাছে এই ছোট্ট শহরে ভিড় তত বাড়তে থাকে। তবে প্রতিবারের থেকে এবারের পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। এবছর বেথলেহেম একেবার জনশূন্য।  ইজরায়েলের হামলায় ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ও গাজা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় নেতারা পরিস্থিতি বিচার করে বড়দিনের অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ইজরায়েলের বিমান ও স্থল অভিযানে ২০,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।  গাজা স্ট্রিপের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৫% বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজরায়েলে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার ফলে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। যার ফলে কমপক্ষে ১,২০০ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৪০ জনেরও বেশি গাজার নাগরিককে বন্দি করা হয়েছে। খ্রিস্টানদের পছন্দের জায়গা বেথলেহেমে দুঃস্বপ্নের বাস্তবতা নেমে এসেছে। শহরের কেন্দ্রস্থলে, ম্যাঞ্জার স্কোয়ারের ঐতিহ্যবাহী বিশাল ক্রিসমাস ট্রি সব সময় বিশ্বের মানুষের কাছে বড়দিনের বিশেষ আকর্ষণ। কিন্তু চলতি বছরে ঐতিহ্যবাহী সেই ক্রিসমাস ট্রি অনুপস্থিত।

জেরুজালেমের থেকে মাত্র ৮ কিমি দূরে বেথলেহেম শহর। কিন্তু ইজরায়েল থেকে বেথলেহেম শহরে যাওয়া সাধারণের জন্য মোটেই সহজ নয়।  ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের এই শহরে যেতে গেলে ইজরায়েলের সেনাবাহিনীর একাধিক চেক পয়েন্ট অতিক্রম করতে হয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে ইজরায়েল বেথলেহেম এবং পশ্চিম তীরের অন্যান্য ফিলিস্তিনি শহরগুলিতে চলাচল সীমিত করেছে, সামরিক চেকপয়েন্টগুলি প্রবেশ এবং বাইরে প্রবেশের অনুমতি নিতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে ফিলিস্তিনিদের দৈনন্দিন জীবন। 

বেথলেহেমের অর্থনীতি তীর্থযাত্রী এবং পর্যটনের উপর নির্ভর করে। কিন্তু এবারে ক্রিসমাসে বাইরে থেকে পর্যটক দূরে থাক, ফিলিস্তিনিরাও বেথলেহেমের চার্চ অফ দ্য নেটিভিটিতে আসতে পারছেন না।  যার ফলে চার্চের বেশিরভাগ অংশ ফাঁকা হয়ে পড়ে রয়েছে। দোকানিরা জানাচ্ছেন, পসার নিয়ে বসে রয়েছেন। ক্রেতা নেই। করোনা মহামারীর জেরে ব্যবসা প্রায় বন্ধের মুখে হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে ব্যবসা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু ইজরায়েল আর হামাসের সংঘর্ষে সমস্ত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।  স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এধরনের ক্রিসমাস আগে কখনও তাঁরা দেখেননি। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, এই যুদ্ধ শেষ হোক, তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরে আসুক শহরের বাসিন্দারা।