নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলাদেশে প্রবল বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। যার ক্ষোভ গিয়ে পড়ল এবার হিন্দুদের ওপর। বাংলাদেশে তিনটি হিন্দু মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর ওই ছাত্র জানায় যে, বাংলাদেশে চলমান বন্যা ভারতের বাঁধ ছেড়ে দেওয়ার ফলে জলের কারণে হয়েছে এমন গুজবের কারণে সে মন্দিরগুলিকে নিশানা করে। দুই মন্দিরের মূর্তি ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাংচুরের পর তৃতীয় মন্দির ভাংচুর করার সময় ১৮ বছর বয়সী রাব্বি হোসেনকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুরিয়া ও কালীগ্রাম এলাকার মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী জানায়, পাকুরিয়া ইউনিয়নের পাকুরিয়া পালপাড়া, ঘোষপাড়া ও কালিগ্রাম এলাকায় রাব্বি হোসেন হিন্দু মন্দিরের তালা ভেঙ্গে মন্দিরের মূর্তি ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাংচুর করে। লক্ষ্য করা মন্দিরগুলোর নাম হল কালীগ্রাম সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, পানিকামারা মন্দির এবং পাকুরিয়া মন্দির। বাগ পৌরসভার কালীগ্রামের পুণ্ডরীপাড়ায় মন্দির ভাঙচুর করতে গিয়ে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশে হস্তান্তর করার পর মন্দির কমিটির সভাপতি অরুণ সরকার রাব্বির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এই ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুজিত কুমার পান্ডে তাৎক্ষণিকভাবে তিনটি মন্দির পরিদর্শন করেন। ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "ভারতের ছেড়ে দেওয়া জলে দেশে বন্যা সৃষ্টির গুজব দেখে রাগের বসে মন্দিরে হামলার কথা স্বীকার করেছে রাব্বি হোসেন"। তিনি আরও বলেন, “হোসেন একটি মন্দিরে মূর্তি ভেঙে ফেলেছে, এবং অন্য দুটি মন্দিরের অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে। থানায় উপস্থিত লোকজনের সামনে সে স্বীকার করেছে যে সে একাই এটি করেছে, তার সাথে কেউ ছিল না"।
কেন এমন করল সে এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাব্বি জানায়, সে তার বোনের ফোনে দেখে ভারত থেকে জল ছাড়া হয়েছে। যার কারণে বন্যার জলে ডুবে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ। এই ভিডিও দেখে সারারাত ঘুমাতে পারে না সে। নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে একাই মন্দির ভাঙতে যায় সে। এ ব্যাপারে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, "ভাংচুরের ঘটনায় রাব্বি হোসেনের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে"। তবে এর পরেই উঠছে প্রশ্ন, হিন্দু হয়ে বাংলাদেশে বাস করাই হচ্ছে তাদের জন্য কাল? তারাও বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার পরেও তাদের নিজের দেশের মানুষ ভাবতে পারছে না সেখানকার সংখ্যাগুরুরা? যদিও ভারতের ওপর রাগ থাকে সেই রাগ বাংলাদেশী হিন্দুদের ওপর কেনও বহি:প্রকাশ করা হবে?